হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ভারত পাকিস্তানের ইতিহাস খুবই চমকপ্র্রদ। এখানে নানা ধর্মের মানুষ একত্রে মিলেমিশে বসবাস করে। ৪৭ এর দেশ ভাগের পরও বিভিন্ন ধর্মের মানুষ পরস্পরে একে অপরের সঙ্গে জীবন যাপন করছে। যা মানবতার জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের হরগোবিন্দপুর এলাকায় এমন একটি মসজিদ রয়েছে যার সম্পূর্ণ দেখভাল করেন শিখ ধর্মের কয়েকজন অনুসারী। বহু দিন থেকেই তারা এ মসজিদের নিরাপত্তাবিধানসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছেন।
১৯৪০ দশকের শেষ দিকে যখন ভারতে দেশ ভাগ নিয়ে হিন্দু, মুসলিম শিখ ধর্মের অনুসারীরা পরস্পরে শত্রু বনে যাচ্ছিলো এবং মসজিদ, মন্দির ও গুরুদোয়ারা (শিখ ধর্মের প্রার্থনাগার) ধসিয়ে দেয়া হচ্ছিলো তখন শিখদের নাহঙ্গ সম্প্রদায়ের গুরু ঘোষণা দিয়েছিলেন, যদি কেউ মসজিদের গায়ে হাত দেয় তাহলে আমরা তাকে হত্যা করে ফেলবো। তখন থেকেই ওই গুরুর বংশের লোকেরা মসজিদটি দেখাশুান করে আসছে।
মসজিদ চত্বরে ৫০ ফিট লম্বা একটি লাঠিতে ঝুলন্ত দুধারি তরবারিতে লেখা আছে, মসজিদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব এখন শিখ গুরুর হাতে।
এ মসজিদটির নির্মাণ বিষয়ে জানা যায়, শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ সিং ১৭ শতকে হরগোবিন্দপুরে শহরের গোড়াপত্তন করলে সেখানে মুসলামানদের জন্য একটি মসজিদও নির্মাণ করেন।
তিনি মাত্র ১১ বছরে বয়সে শিখদের ষষ্ঠ গুরু নির্বাচিত হন। তার বাবা ছিলেন ৫ম গুরু।
গত ৩৫ বছর যাবত মসজিদের খেদমত করে আসা বাবা বালোনাত সিং বলেন, এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হছিলো তাতে অনেক মানুষ নিহত হয়। তখন গুরু বাবা মন্দির ও গুরুদোয়ারার পরিবর্তে একটি মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন।
গুরু হরগোবিন্দ ধর্মের বিরুদ্ধে নয় বরং অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন।
বালোনাত সিং মসজিদের পাশেই একটি ঘরে বসবাস করেন। তার অধিকাংম সময় কাটে ধর্মীয় কিতাব পাঠ ও মসজিদের সেবায়।
এ মসজিদটি মানুষের নজরে আসে যখন ইউনিসেফ এর সংস্কারের কাজ হাত দেয়। তখন থেকে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিনই মসজিদটি দেখতে আসেন।
সূত্র: ডেইলি কুদরত উর্দু
মুহাম্মদ সা. এর অবমাননা করে ছবি নির্মাতার ইসলাম গ্রহণ