রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

বাবরি মসজিদ বিষয়ে নিজের অবস্থান থেকে ফিরলেন সালমান নদভি (ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ মামলা বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ শীর্ষ উলামা ও ইসলামি নেতৃবৃন্দের বিপরীতে নিজস্ব মতামত পেশ করেছিলেন আল্লামা সালমান হাসানি নদভি৷

হিন্দু গুরু রবি শংকরের সাথে তিনি এ বিষয়ে কয়েকটি বৈঠকও করেছিলেন৷

তার কথা ছিলো, বাবরি মসজিদ মামলা আদালতে নয় বরং হিন্দু মুসলিম এক সাথে বসে ফায়সালা করবে এবং তিনি এও বলেছিলেন, বাবরি মসজিদের স্থান হিন্দুদের দিয়ে দেয়া হবে৷

এর পরিবর্তে অন্য জায়গায় মুসলমানদের একটি ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার জায়গা বরাদ্দ দিতে হবে৷

তার এই বক্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়৷ এর জেরে তাকে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের নির্বাহী সদস্য পদও হারাতে হয়৷

তবে গত ১মার্চ তিনি ১০ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে তার আগের অবস্থান থেকে রুজু করে সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের মতামতের সাথে সহমত পোষণ করেছেন৷

সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমি মুসলিম অমুসলিম সবার উদ্দেশ্যে বলছি, বর্তমানে রাম মন্দির বাবরি মসজিদের মামলার ইস্যুর আলোচনা চলছে৷ যার মুকাদ্দামা দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত বিচারাধীন রয়েছে৷ কিন্তু কোনো চূড়ান্ত ফায়লালা এখনো হতে পারেনি৷

আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো, এক ধরনের সন্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং একটি সঠিক সমাধানে পৌঁছানো৷ দেশে যে সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকার বিরাজমান তা দূর করতে হলে হিউম্যানিটির উপর ভিত্তি করে সব ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি৷ সে হিসেবেই আমি চেয়েছিলাম একটি সমোঝতা হয়ে যাক৷

একই মনোভাব পোষণ করেন হিন্দু গুরু শ্রী রবি শংকর৷ তিনি এ বিষয়ে মানুষের সাথে ধারাবাহিক সাক্ষাত করছিলেন৷ ফলে আমিও তার সাথে কয়েকবার সাক্ষাত করি৷ দুই বার তো হয় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে৷

৮ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরে সাথে সরাসরি সাক্ষাত হয়৷ সর্বশেষ ১ মার্চ লক্ষ্মৌতে তার সঙ্গে সাক্ষাত হয়৷ এ সাক্ষাত তো বাবরি মসজিদ ইস্যুর সমাধানের উদ্দেশ্যেই হয়েছে৷

যেখানে মামলার ২৫ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে, হাজারো মানুষ শহিদ হয়েছে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে পরস্পরে সমাধা করে নেয়াই আমার মাকসাদ ছিলো৷

কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের মনে হয়েছে, মুসলমানদের মধ্যে যেমন বড় একটি সংখ্যা এভাবে সমাধান চান না তেমনি হিন্দুদের মাঝেও কট্টপন্থী সংগঠনের ব্যক্তিবর্গও সমঝোতা চায় না৷ তারা তো নানা প্রকারের ঘোষণাও দিয়ে আসছে৷

আমরা তো চাচ্ছিলাম শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক৷ কিন্তু এখন তো দেখি অশান্তি বাড়ছে৷ বহু মুসলিম নেতা বিরক্ত ও পেরেশান হচ্ছেন৷ রবি শংকরের সাথে কথা বলার সময় বিষয়টি সামনে আসলে তিনিও জানালেন, তার ধর্মের লোকেরাই তাকে নানা হুমকি ধমকি দিচ্ছে৷

তিনি বলেন, আমি এটা পরিস্কার করে দিতে চাই, আদালতের রায়ের অপেক্ষা আমরাও করতে চাই৷ এতে কোনো সমস্যার কিছু নেই৷ তবে এ বিষয়ে যারা আমাকে অতিরিক্ত কথা বলছেন, গালি দিচ্ছেন তাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে৷

মাওলানা সাইয়িদ আরশাদ মাদানি ও মাওলানা রাবে হাসান নদবি আমাদের বড় ও মান্যবর৷ তাদের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক রয়েছে৷

এ বিষয়টি নিয়ে তাদেরকে পেরেশান ও চিন্তিত দেখতে পাচ্ছি তাই আমি আবারও স্পষ্ট করে বলছি, বাবরি মসজিদ বিষয়ে আদালতের রায়েরই অপেক্ষা করবো৷ এর বাইরে তড়ঘড়ি কোনো ফায়সালা গ্রহণ করবো না৷ আমার কারণে আমার বড়দেরকে চিন্তিত দেখতে চাই না৷

যেহেতু দুই ধর্মের নেতৃবৃন্দ সমোঝোতার জন্য তৈরি নয় তাই বাবরি মসজিগ মামলা ইস্যুকে আমাদের এজেন্ডা থেকেই খারিদ করে দিচ্ছি৷

আমি আলাদা কোনো বোর্ড তৈরি করছি না৷ বরং ‘হিউম্যানিটি ওয়েলফেয়ার’ নামে একটি সংগঠন বানানো হচ্ছে যা সব ধর্মের মানুষের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করবে৷ এর সাথে মুসলিম পার্সোনাল বোর্ডের কোনো সম্পর্ক নেই৷ দুইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস৷

তবে পার্সোনাল লা বোর্ডের কাছে আমার অনুরোধ, বোর্ডের কিমিটি তালিকা পবিত্র করুন৷ এমন কিছু মানুষকে কমিটির তালিকায় রাখা হয়েছে যারা কোনো ধর্মের মানুষের কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ বোর্ড থেকে ওয়াইসিকে (ব্যারিস্টার আসাদুদ্দিন ওয়াইসি) বাদ দিন৷

তার যে পরিচয় তা কোনো ভালো পরিচয় নয়! তাকে বের না করা হলে এটাই ধরে নেয়া হবে যে বোর্ড ওয়াইসির রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে৷

কামাল ফারুকী, কাসেম রাসুল ইলিয়াস, ইউসুফ পাসালাকেও বোর্ড থেকে বের করতে হবে৷ এদের বিদায় করলেই আমি বোর্ডে ফিরে যেতে চাই৷ অবশ্য না বোর্ডের আমার প্রয়োজ, না আমার বোর্ডের প্রয়োজন৷

তবে বোর্ডের যা ত্রুটি আছে সেগুলোও দূর করার আবেদন জানাচ্ছি৷ আমি মাওলানা সাইয়িদ আরশাদ মাদানি ও মাওলানা সাইয়িদ রাবে হাসানি নদবির সম্মানের প্রতি খেয়াল রেখে আমি আমার পূর্বের অবস্থান থেকে ফিরে আসছি এবং মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডে দীর্ঘ ৩২ বছর সম্পৃক্ত থাকায় আমি বোর্ডে ফিরে যেতে চাই৷

সব মুসলমানের কাছে অনুরোধ, আপনারা শান্ত থাকুন৷ চিন্তিত হবার কিছু নেই৷ আর যারা একজন আলেমের শানে অসম্মানজনক কথা বলেছেন তারা তওবা করুন৷ আমরা চাই সবার কাছে ইসলামের আসল পরিচয় ছড়িয়ে যাক৷ সর্বত্র শান্তি বজায় থাকুক৷

https://www.facebook.com/nur.alkarim/videos/1773325269397738/?t=0

একমঞ্চে নরেন্দ্র মোদি ও মাহমুদ মাদানী; জাতীয় ঐক্যের পয়গাম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ