হাওলাদার জহিরুল ইসলাম
সাব এডিটর
সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান বর্তমান পৃথিবীর একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। ৩২ বছর বয়সী এই যুবরাজের সৌদির সেনাবাহিনী, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, সিকিউরিটি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দিন দিন তার প্রভাব বেড়েই চলছে।
বিন সালমানকে বর্তমানে সৌদিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একজন রোল মডেল মনে করা হয়। তিনি এতোটাই পাওয়া রফুল যে সৌদি ইতিহাসেন তার মতো দ্বিতীয় জন খুঁজে পাওয়া যায় না। তিনি যেন মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছেন।
এ যুবরাজের প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও এতোটুকু জানা যায়, তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় তার বাবা শাহ সালমানের অধীনে কাটিয়েছেন।
২০১৫ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসে বিন সালমানের উত্থানের কারণ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। বিন সালমান তার তিন সৎ ভাইকে পেছনে ফেলে সম্মানের আসনে সমাসীন হন।
শিক্ষাজীবনে তিনি সৌদির কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি থেকে আইনের ওপর ডক্টরেট করেন।
তিনি কয়েকটি বিষয়ে তার বাবার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে এটা স্পষ্ট, তিনি তার ভবিষ্যত বাদশাহির পথ পরিস্কার করতে আম জনতার সহানুভূতি অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর এর জন্য তিনি নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।
বিন সালমানকে পৃথিবী তখন জানতে পারে যখন ২০১৫ সালে শাহ সালমান ক্ষমতারোহণের পর যুবরাজকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ২৯ বছর। তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ব্যাপারে তার জোরালো পদক্ষেপ বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। অনেকে মনে করেন, কাতার বয়কেটের ক্ষেত্রেও তার বিশেষ ভূমিকা ছিলো।
২০১৬ সালে তিনি সৌদির জন্য দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক বছর ভিষণ ২০৩০ ঘোষণা করেন। যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো সৌদিকে তেলভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বের করে শিল্পমুখী করা।
কিছু দিন আগে তিনি ৫০০ আরব ডলার খরচে লোহিত সাগর পাড়ে এক প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন।
এছাড়া বিন সালমানের উত্থানের পেছনে ‘সৌদি আরবে মধ্যপন্থী ইসলামের প্রচলন দরকার’ এমন ঘোষণাও বড় ভূমিকা রাখে। আর এর মাধ্যমে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্ব মিডিয়ার আলোনায় আসেন।
চলতি বছরে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানো, চাকরিতে যোগ দেয়া ও সেনাবাহিনীতে অংশ গ্রহণের ঘোষণাও তাকে বিশ্ব মিডিয়ায় আসতে সহায়তা করে।
গণমাধ্যমের ভাষ্য মতে, তিনি নিজের আগামী ঠিক করতে সৌদির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কোণঠাসা করে রেখেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন নায়েফকে সরিয়ে সে পদটি তিনি ভালোভাবেই বাগিয়ে নিয়েছেন।
ইউটিউবে আমাদের ভিডিওগুলো দেখতে ক্লিক করুন
এছাড়া দুর্নীতির আভিযোগ এনে অন্যান্য যুবরাজ ও প্রভাবশালী নেতাদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন।
অপরদিকে রাষ্ট্রের তিন গুরত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বিভাগ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল গার্ড নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। আমেরিকান কর্তৃপক্ষের সাথেও তার গভীর সখ্যতা রয়েছে। আমেরকান সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাকে ‘স্মার্ট’ উপাধি দিয়েছিলেন।
এমনিভাবে তিনি বর্তমান ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সাথেও গড়ে তুলেছেন মজবুত সম্পর্ক। অনেকেই বলছেন, শাহ সালমানের ইন্তেকালের পর তিনিই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করবেন এবং একজন যুবক বাদশাহ হিসেবে রাজত্ব করতে পারেন কয়েক দশক।
সূত্র: ডেইলি কুদরত
পড়ুন প্রিন্স সালমানের সাক্ষাৎকার: ‘আমি নিজের স্বপ্নগুলো নিজে দেখে যেতে চাই এজন্য কাজে তাড়াহুড়া করছি’