রকিব মহাম্মাদ
আওয়ার ইসলাম
মানবসভ্যতার সূচনা যেখানে, সেই মেসোপটেমিয়া ও বৃহত্তর সিরিয়াকে বলা যেতে পারে সভ্যতার সূতিকাগার। কিন্তু সিরিয়াতে যখন সভ্যতা মুখ লুকায়, ভূমধ্যসাগরে যখন মানবতার ভরাডুবি ঘটে, শান্তির পায়রা উড়বার মতো কোনো আকাশ যখন খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন বুঝতে হবে পরাশক্তিরা চাচ্ছে না— শান্তি আসুক সিরিয়ায়।
প্রায় অর্ধযুগ ব্যাপী সিরিয়া নিরন্তর গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত। বিশ্বের পরাশক্তিদের চাঁদমারিতে পরিণত হয়েছে দেশটি। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী কিছু দেশ এবং বিশ্বের পরাশক্তিদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ভয়াবহ টানাপড়েনে পুড়ছে সিরিয়ার মানবতা। রাজায় রাজায় যুদ্ধের বলি হচ্ছে উলুখাগড়া-তুল্য নারী-শিশু ও নিরপরাধ মানুষ।
নতুন করে এলাকা পুনর্দখলের চেষ্টার কারণে গত কয়েক দিনে দেশটির ঘৌতার বিভিন্ন শহরে সামরিক, বেসামরিক এলাকায় ব্যাপক বোমা বর্ষণে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আর আহতের সংখ্যা ১২ শতাধিক।নিহতদের মধ্যে একটা বড় অংশ রয়েছে শিশু ও নারী।
এমন বাস্তবতায় সিরিয়া যুদ্ধের রাশ টেনে ধরতে জাতিসংঘ কার্যত কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারছে না। সংস্থাটির পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান কোনো প্রতিক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম হয়নি। মূলত, সিরিয়া বিষয়ে জাতিসংঘ অনেক আগেই ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে সংস্থাটির কোনো আহ্বান মূল্যায়িত হওয়ারও কোনো যুক্তি নেই।
এদিকে, সাধারণ মুসলিমদের হাত বাঁধা । শুধু চোখের পানি ঝরিয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া তাদের কাছে প্রতিবাদের আর কোন ভাষা নেই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৃদয় বিদারক সব ছবি শেয়ার হচ্ছে। ফেসবুকের টাইমলাইনে ভেসে উঠছে সাধারণ মানুষের আকুতি।
আলোচিত ডাবল স্ট্যান্ড বইয়ের লেখক শামসুল আরেফীন শক্তি তার ফেসবুকে টাইমলাইনে উপরের ছবিটি শেয়ার করে লেখেছেন, ‘দে বাপ, জান্নাতে গিয়ে উড়ে বেড়ানোর আগে তোর এই পা দিয়ে 'আরবি নামধারী' আমার মুখে লাথি মেরে যা। অভিশাপ দিতে দিতে যা। আমাদের এই ঘুম যেন দুঃস্বপ্ন হয়।'
আরেকজন তরুণ লেখক ও আলেম জুবায়ের রশিদ সিরিয়ার এই করুণাবস্থার অবসান ঘটুক চেয়ে ইমাম মাহদির প্রত্যাশায় আছেন। তিনি লিখেছেন, ইমাম মাহদি আপনি তাড়াতাড়ি আসেন। এই সিরিয়ায়। এই আরাকানে। এই পৃথিবীতে। আপনি আসেন হে আল্লাহর দূত ‘
এমন হাজারো ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের হৃদয়ের আকুতি মিশিয়ে পোস্ট করছেন ফেসবুকে। কেউ বা রাতের গভীরে আল্লাহর দরবারে সেজদায় লুটে পড়ছেন।
সকলের একটি চাওয়া, সিরিয়ায় চলমান সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বন্ধ হোক। মানবতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পৃথিবীর অভিভাবকরা অমানবিকতাকে আলিঙ্গণ করে যাবে, এটা কেউ চায় না কোনদিন। মানবিক পৃথিবী নির্মাণে এ ধরনের হীন কাজ বন্ধ করা জরুরি বলে মনে করছেন সাধারণ মুসলিমরা।
সিরিয়া সম্পর্কে রাসুল সা. এর ১০ ভবিষ্যদ্বাণী (ভিডিও)