রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ১০ ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আমিনুল ইসলাম হুসাইনী: সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই রূপময় বাংলার যেমন রয়েছে চোখজুড়ানো, মনভলানো অনেক দর্শনীয় স্থান। তেমনি রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনাও।

সেসব স্থাপনা আমাদের চিত্তে প্রফুল্লতা এনে দেয়, এনে দেয় গৌরবের উচ্ছ্বাস। স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের বীরত্বের ইতিহাস। সেসব ঐতিহাসিক স্থাপনার সাথে মিশে আছে ক্ষণজন্মা মনীষিদের নানান স্মৃতি।

মিশে আছে আমাদের ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য। বংলাদেশের ৬৪টি জেলায়-ই এরকম অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। তবে এ প্রতিবেদনে কেবলমাত্র তুলে ধরা হয়েছে ‘ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া’র ১০টি ঐতিহাসিক স্থাপনা।

প্রতিবেদনটি করেছেন ‘আওয়ার ইসলাম’ প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম হুসাইনী

১. আড়িফাইল মসজিদ

শিক্ষা-সংস্কৃতির রাজধানীখ্যাত ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনামূহের মধ্যে আড়িফাইল মসজিদটি অন্যতম একটি নিদর্শন। মসজিদটি সরাইল উপজেলার আড়িফাইল গ্রামে সাগরদিঘীর পাশে অবস্থিত।

‘বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর’ এর তালিকায় এটি একটি অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। যা নির্মিত হয়েছে ৬২ সালে । মসজিদটির দৈর্ঘ ৮০ এবং প্রস্ত ৩০ ফুট। দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচফুট।

মসজিদটিতে প্রবেশের জন্য রয়েছে ৫টি প্রবেশপথ। যার তিনটিই পূর্ব দিকে এবং বাকি দু’টি উত্তর ও পূর্ব দিকে। মসজিদের চার কোনে রয়েছে নান্দনিক চারটি বুরুজ। আরো আছে পদ্মফুলে অঙ্কতি তিনটি গম্বুজ। মসজিদটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে নানান রহস্য।

জনশ্রুতি রয়েছে, ঈশা খাঁ’র আমলে ত্রিপুরা রাজ্যের তৎকালীন রাজধানী সরাইল বার ভূঁইয়াদের একজন ঈশা খাঁ’র স্থলাভিষিক্ত ছিলেন। তাঁরই অনুরোধে ঈশা খাঁ মসজিদটি নির্মাণ করেন।

মুসুল্লিদের অজু করার জন্যও মসজিদের পাশে একটি দিঘীও খনন করা হয়। যার নামকরণ করা হয়েছে সাগরদিঘী।

প্রাচীনশিল্পকলার অমর স্বাক্ষী এই মসজিদটিকে দেখতে প্রতিদিনিই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসে নানান মানুষজন।

২. জামেয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার আরেক নাম উলামায়ে কেরামের শহর। দেশের নানা প্রান্তের ইলম পিপাসু শিক্ষার্থীরা এশহরে এসে জড়ো হয় দীনি জ্ঞান আহরণের জন্য। সেই ইলমভ্রমরদের জন্য এ শহরের প্রায় প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় গড়ে ওঠেছে দীনি বিদ্যাপীঠ।

আর এই সকল বিদ্যাপীঠের জননী হচ্ছে ‘জামেয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া’। মাদরাসাটি স্থাপিত হয় ১৯১৪ সালে। আর এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন আল্লামা আবু তাহের ইউনুস রহ.।

কথিত আছে, এক সময় ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া ছিল কাদিয়ানিদের দখলে। তারা সাধারণ মুসলমানদের কাদিয়ানীদের মধ্যে জড়িয়ে ফেলছিল। তখন স্বপ্নে হুজুর সা. আল্লামা আবু তাহের ইউনুস রও.কে স্বপ্নযোগে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার আসার নির্শ দেন।

আবু তাহের ইউনুস রহ. ছিলেন উপমহাদেশের প্রাচীণ ও প্রধান দীনি বিদ্যাপীঠ ‘দারুল উলুম দেওবন্দ’ মাদরাসার সুরার সদস্য। তিনি সেখান থেকে দীনি ঝাণ্ডা হাতে ছুটে আসেন ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায়।

এখানে এসে শিকড় গাঁড়েন দীনের বাতিঘর জামেয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া’র। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই দীনি বিদ্যাপীঠের মুহতামিমের দায়ীত্বে আছেন অর্ধ শতাধিক গ্রন্থের লেখক আল্লামা মুফতি মুবারকুল্লাহ।

বর্মানে মাদরাসায় প্রায় দেড় হাজার ছাত্র দীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে।

৩. গোকর্ণ নবাববাড়ি

প্রায় ২০০ বছর আগে নির্মিত এই নবাব বাড়িটির সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও, এই নবাব বাড়িতেই জন্ম নেন ক্ষনজন্মা রাজনীতিবিদ স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা।

সৈয়দ শামসুল হুদা কলকাতা মাদরাসায় অধ্যাপক রূপে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ওকালতি পাশ করার পর তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইনব্যবসা শুরু করেন। তিনি ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বিতীয় মুসলিম বিচারপতি।

আইনশাস্ত্রে তার ব্যাপক পড়াশুনা থাকায় কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ১৯০২ সালে ‘টেগোর প্রফেসর অব ল’পদ প্রদান করেন। ১৯০৯ সালে ইমপেরিয়েল লেজিসলেটিভ কাউনসিলের সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯১২ সালে গর্ভনর লর্ড কারমাইকেল কর্তৃক তিন সদস্যবিশিষ্ট যে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা ছিলেন এর সর্বপ্রথম ভারতীয় সদস্য।

১৯১২ সালে তিনি সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের সভাপতির পদ অলংকৃত করেন। ঐতিহাসিক এই নবাববাড়িটি অবস্থিত ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার গোকর্ণ গ্রামে।

৪. গঙ্গাসাগর

অতীতে নৌ-পথের গুরুত্ব যখন অধিক ছিল, তখন হাওড়া নদীর তীরবর্তী গঙ্গাসাগর ছিল মূলত আগরতলার নদী-বন্দরস্বরূপ। গঙ্গাসাগরের পূর্বনাম ছিল রাজদরগঞ্জ বাজার।

এ বাজার তৎকালীন সময়ের বিশিষ্ট ব্যাংক ‘দি এসোসিয়েটেড ব্যাংক লি. অফ ত্রিপুরা’র প্রধান অফিস হিসেবে স্থাপিত হয়েছিল। তখনো উপমহাদেশে ব্যাংকের প্রচলন সঠিকভাবে হয়নি। এ অবস্থায় একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান অফিস স্থাপনা উল্লেখিত স্থানের ঐতিহাসিকতাকেই উজ্জ্বল করে বৈকি।

তাছাড়া ত্রিপুরা রাজ্যের ভাটি অঞ্চলের খাজনা আদায়ের মহল অফিসও এ রাজদরগঞ্জ বাজারেই ছিল। রাজদরগঞ্জ বাজারের পরবর্তী নাম মোগড়া বাজার। এখানে ‘সেনাপতি বাড়ি’ নামে একটি জায়গা আছে।

তাই মনে করা হয়ে থাকে যে, ত্রিপুরা-রাজ্যের কোন এক সেনাপতি এখানে বসবাস করতেন স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে। ত্রিপুরা-রাজা এখানে একটি বিরাট দীঘি খনন করান। গঙ্গা দেবীর নামানুসারে দীঘির নামকরণ করেন ‘গঙ্গাসাগর দীঘি’।

সেই থেকেই জায়গাটির নাম গঙ্গাসাগর হয়ে যায়।

৫. হাতিরপুল

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন সরাইল উপজেলার বারিউড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ১০০গজ পূর্বদিকে রাস্তার বামপাশে হাতিরপুলটি অবস্থিত। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর থেকে পুলটিকে সংস্খার ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দেওয়ান শাহবাজ আলী সরাইলের দেওয়ানী লাভের পর বর্তমান শাহবাজপুরে তার কাঁচারী নির্মাণ করেন। কার্যোপলক্ষে সরাইলের বাড়ী এবং শাহবাজপুরে যাতায়াতের জন্য সরাইল থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করেন।

রাস্তাটি ১৬৫০খ্রি. নির্মিত হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। উক্ত রাস্তাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় কুট্টাপাড়ার মোড় হতে শাহবাজপুর পর্যন্ত এখনো টিকে আছে। পরিত্যক্ত এ রাস্তাটিকে স্থানীয়রা জাঙ্গাল বলে ডাকে।

জাঙ্গালটির উপরে পুলটি অবস্থিত। কথিত আছে দেওয়ানরা হাতির পিঠে করে চলাচল করতো এবং পুলটির গোড়ায় হাতি নিয়ে বিশ্রাম নেয়া হতো বলে এটিকে হাতির পুল নামে অভিহিত করা হয়।

৬. কোল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থল

‘সালদা নদী’ থেকে পূব দিকে ২/৩ কিলোমিটার বালুকাময় রাস্তা পাহাড় ও টিলার গাঁ ঘেষে কুল্লাপাথর গ্রাম। এ গ্রামেই শুয়ে আছে স্বাধীনতার জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়া ৪৯ শহীদ।

তাঁদের ঘিরেই  এই ‘কোল্লাপাথর শহীদ সমাধিস্থল। সমাধিস্থলে দু’জন বীর উত্তম, একজন বীরপ্রতিকের সমাধি রয়েছে। রয়েছে আরো ৮৭ জন মুক্তিযোদ্ধার সমাধিও।

সমাধিস্থলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি রেস্ট হাওজ। আছে মসজিদও। মুক্তিযুদ্ধকে জাতির সামনে তুলে ধরতে কসবা কোল্লাপাথর সমাধিস্থল অনন্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

৭. উলচাপাড়া মসজিদ

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার সদর থানার অধীনে উলচাপাড়া গ্রামে অবস্থিত হওয়ার কারণেই মসজিদটির নামকরণ করা হয় ‘উলচাপাড়া মসজিদ’। এই মসজিদটিকে উত্তর পাড়া শাহী জামে মসজিদ নামেও ডাকা হয়।

মসজিদটিতে যেসব শিলালিপি পাওয়া গেছে, তা থেকে অনুমান করা যায় ১১৪০ হিজরী (১৭২৭-২৮) খ্রী. তে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা শাহ সৈয়দ মো: মুরাদ।

যাকে সমাহিত করা হয়েছে মসজিদেরই পাশে। মসজিদটির আয়তন ৫২, ৫৩ ফুট। এর ভিতরে ৪ ফুট পুরু দরজা রয়েছে। রয়েছে গম্বুজের কেন্দ্র থেকে নিচ পর্যন্ত খুব সুন্দর কারুকাজ।

মসজিদের ভিতরের দেয়ালেও খুব সুন্দর কারুকাজ করা হয়েছে।

Related image

৮. ফারুকী পার্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণাংশে ফারুকী পার্কের গঠনশৌকর্যে অতি মনোরম একটি শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরেই বাংলাদেশে দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য স্মৃতিসৌধ এটা।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়।

১৯৮৪ সালের ১৯শে মে এ স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্ত্তর স্থাপন করেন কুমিল্লার পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ও উপ-অঞ্চল ১২র উপ-আঞ্চলিক সামরিক আইন প্রশাসক বিগ্রেডিয়ার আ ম সা আমিন পি এস পি ।

১৯৮৫ সালের ২৯শে এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ও চীফ মার্শাল ল’ এডমিনিস্ট্রেটর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এনডিসি, পিএসসি এটা উদ্ধোধন করেন।

৯. কালভৈরব মন্দির

৩০০ বছরের পুরনো এই কালভৈরব মন্দিরটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মেড্ডায় অবস্থিত। কথিত আছে, ফুলবাড়িয়া গ্রামের জনৈক দুর্গাচরণ আচার্য পাথর ও বালি দিয়ে এই কালভৈরমূর্তিটি নির্মাণ করেন।

এটি ২৪ ফুট উচ্চতার বিরাটাকার এক মূর্তি। ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এই কালভৈরব বিগ্রহমূর্তিটি ধ্বসে পড়ে। পরে ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারী মহারাজের অনুপ্রেরণায় ও স্থানীয় ভাস্করকর্মীদের চার বছরের অকান্ত পরিশ্রমের ফলে কালভৈরব বিগ্রহ ও মন্দির পুনর্নির্মিত হয়।

৬০ শতাংশ জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এ মন্দিরটি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার একটি ঐতিহাসিক স্থপনা হিসেবে স্বীকৃত।

১০. বিদ্যাকুট সতীদাহ মন্দির

নবীনগর উপজেলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ বিদ্যাকুট গ্রামের একটি স্থান বিদ্যাকুট সতীদাহ মন্দির। মন্দিরটি গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত। প্রায় দুই শতাধিক বছরের পুরাতন জীর্ণ এ মন্দিরটিরটি নির্মাণ করেছিলেন বিদ্যাকুটের প্রসিদ্ধ হিন্দু দেওয়ান বাড়ির লোক দেওয়ান রাম মানক।

তৎকালীন সময়ে এদেশে হিন্দু সমাজে সতীদাহ প্রথা চালু ছিল। হিন্দু সমাজের এই অমানবিক এবং বীভৎস প্রথা ১৮২৯ সনে লর্ড উইলিয়াম বেনটিংক আইন করে বন্ধ করে দেন।

লর্ড বেনটিংক কর্তৃক সতীদাহ নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ভারতের অন্যান্য স্থানের মত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও এ প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ১৮৩৫ সনে রাম মানিকের মাতাকে এই সতীদাহ মন্দিরটিতে সর্বশেষ সতীদাহ বরণ করেন।

তার নামে একিটি শ্বেত পাথরের নাম ফলকও বসানো ছিল। কিন্তু গত স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এটি বিনষ্ট হয়। বর্তমানে বিদ্যাকুটে তাদের বংশধরেরা না থাকায় সেই নারীর নাম জানা যায়নি।

আড়িফাইল মসজিদ, জোড়া কবর, হাতিরপুল আর উলচা পাড়া মসজিদসহ ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার এই ঐতিহাসিক স্থপনা মুঘল আমলের অপার কীর্তি বহন করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আড়িফাইল মসজিদ মুঘল আমলে নির্মিত হলেও সংস্কারের নামে আধুনিক টাইলসে এর দেয়াল, মেঝে এমন ভাবে ঢেকে দেয়া হয়েছে, দেখে এখন আর বুঝার উপায় নেই, এটি ইতিহাসের এক অনন্য কীর্তি।

জেলার অন্যসব পুরাকীর্তির অবস্থাও একই রকম। জোড়া কবর, হাতিরপুল কিংবা উলচাপাড়া মসজিদ। সুনিপুণ নির্মাণ শৈলী, আর দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করলেও, যত্মের অভাবে খসে পড়ছে আস্তর, ভরে যাচ্ছে ঘাস আর শ্যাওলায়।

তাই স্থানীয়দের দাবি, শত শত বছরের পুরোনো এ পুরাকীর্তি স্থাপনাগুলো যেন অযত্ন অবহেলার শিকার না হয়। এগুলোর সংস্কার এবং সংরক্ষণে যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়।

পুরাকীর্তি রক্ষায় বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়না বলে স্বীকার করলেন জেলা প্রশাসক নিজেই। বললেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ