আওয়ার ইসলাম
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে পাঁচ দিনে পঞ্চাশ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে বিএনপি। শনিবার একদিনের জন্য এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্যাপক সারা পাওয়ায় তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় দল। এখন নীতিনির্ধারকরা চাইছেন- দুই কোটি স্বাক্ষর সংগ্রহ হলে স্মারকলিপি আকারে সরকারকে তা দেয়া হবে। সেই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বাক্ষরের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরেও আনতে চাইছে দলটি।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিতে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের ব্যাপক সারা পেয়েছি আমরা। এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। টার্গেট (দুই কোটি) পূরণ হলে স্মারকলিপি আকারে তা দেয়া হবে। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, দফতরের তথ্যানুযায়ী এরই মধ্যে পঞ্চাশ লাখেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই তা দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর তার মুক্তি দাবিতে দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি। এর মধ্যে ছিল শনিবার দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর অভিযান, রোববার সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি ও মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর ছাড়া জেলা-মহানগরগুলোয় বিক্ষোভ সমাবেশ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, প্রথম দিনে এ কর্মসূচিতে (স্বাক্ষর সংগ্রহ) দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরেও নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের ব্যাপক সাড়া মেলে। পরে ওই দিনই (শনিবার) দলের মহাসচিবকে হাইকমান্ড এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হয়েছে দুটি কারণে। এক. এতে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে বিএনপি। একই সঙ্গে মানুষের সহানুভূতি প্রকাশের সুযোগ করে দিতে চাইছে দলটি। দ্বিতীয়, দুই কোটির ওপর স্বাক্ষর সংগ্রহ হলে আন্তর্জাতিক মহলে তা আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরি করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে এ কর্মসূচিতে মানুষের অবিশ্বাস্য সারা দেখেছি। রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দোকানদারসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন। এমনকি স্বাক্ষর করতে দেখেছি চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ পরিবারের অনেক নারী সদস্যকেও।
রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, সর্বস্তরের মানুষ অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাও স্বাক্ষর করছেন। রাজশাহী বিভাগে ধারণার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ছাত্র-শ্রমিক সবাই স্বাক্ষর করছেন। যদিও ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে স্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ না নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। তা সত্ত্বেও সব শ্রেণীর মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন।
ঢাকা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ দেখছি আমরা। তারা ইমেইলের মাধ্যমে গণস্বাক্ষরের ফরম নিয়ে পূরণ করে আবার পাঠিয়ে দিচ্ছেন। শুধু ঢাকা বিভাগে ১৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে। আরও ফরম ছাপানোর কাজ চলছে।
বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ক্ষমতাসীনদের বাধা সত্ত্বেও বরিশাল বিভাগে কয়েক লাখ মানুষ স্বাক্ষর করেছেন। খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নিরলসভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকে মুক্ত করতে দেশের মানুষ যে কোনো কর্মসূচি সফলে প্রস্তুত রয়েছে। যুগান্তর