আওয়ার ইসলাম
বাংলাদেশের জন্য এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ মাস হয়ে আসছে আগামী এপ্রিল। এই মাসে তীব্র তাপপ্রবাহ, সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আর কালবৈশাখী ও বজ্রঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সরকারি সংস্থাটির ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল ত্রৈমাসিক প্রতিবেদেন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের ফলে জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের ওপর বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে এল-নিনোর প্রভাবে পুড়েছে পুরো উপমহাদেশ, সেটা চলে ২০১৬ সালের জুন-জুলাই পর্যন্ত। এর পর থেকে প্রতি বছরই প্রকৃতির বিরূপ আচরণের মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। গত বছরও দেশ দেখেছে প্রকৃতির বৈরী আচরণ। রেকর্ড হয়েছে ৩৫ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের।
এ রকমই বৈরী আচরণের দেখা মিলতে পারে আগামী এপ্রিল মাসে। তবে মার্চ জুড়ে প্রকৃতির আচরণ স্বাভাবিক থাকবে বলে জানানো হয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে। মূলত মার্চের শেষ দিক থেকেই ব্যারোমিটারের পারদ ওপরে উঠতে থাকবে।
গত বছর বৈশাখ মাসে অর্থাৎ মধ্য এপ্রিলে বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়নি। তবে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে বেশ কয়েকটি তীব্র তাপপ্রবাহ, জ্যৈষ্ঠ মাসেও ছিল কাঠফাটা রোদ। এ বছরের চৈত্র মাস অর্থাৎ মার্চের শেষ থেকে এপ্রিল মধ্যভাগ জুড়েই রয়েছে তীব্র কালবৈশাখী এবং তীব্র বজ্রঝড়ের আশঙ্কা।
ত্রৈমাসিক আবহাওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসেই বঙ্গোপসাগরে দু-একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত দুই-তিন দিন বজ্রসহ মাঝারি অথবা তীব্র কালবৈশাখী বইতে পারে। দেশের অন্যত্র চার-পাঁচ দিন হালকা থেকে মাঝারি কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে।
তাপমাত্রার তীব্রতাও এপ্রিলে চরমভাবাপন্ন থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়, বিশেষ করে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। ওই অঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে যার তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র দু-এক দিন মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইতে পারে যার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁইতে পারে।
এদিকে আগামী বাহাত্তর ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকা পরযন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ এখন বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পরযন্ত দেশের নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে।
সারা দেশের রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৩১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।