শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই: ধর্ম উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি হেফাজতে ইসলামের সিংগাইরে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশ ২৯ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘জুলাই বিপ্লবে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদান ও প্রত্যাশা’ নিয়ে আলোচনা সভা সোমবার সিলেটে অনুষ্ঠিত বিহানের ‘লেখালেখি ও এডিটিং কর্মশালা’ দেশে ফিরে কর্মফল ভোগ করুন, শেখ হাসিনাকে জামায়াতের আমির রাষ্ট্র সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না: জাতীয় পরামর্শ সভা যাত্রাবাড়ীতে জাতীয় পরামর্শ সভায় গৃহীত হলো ৭ প্রস্তাব বারিধারায় হেফাজতে ইসলামের পরামর্শ সভা শুরু

যেভাবে গৃহকর্মী থেকে মাইক্রোসফটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ফাতেমা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: গৃহকর্মী থেকে মাইক্রোসফটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন কুড়িগ্রামের ফাতেমা। জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতেও থেমে যায়নি সে। কম বয়সেই অভাবের তাড়নায় স্কুল ছাড়তে হয় তাকে। বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে আবার শুরু করেন লেখাপড়া। পারদর্শী হন আইটিতে।

তিনি জানান, অভাবের তাড়নায় নয় বছর বয়সে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় বিদ্যালয় ত্যাগ করেন তিনি। বাবা-মা মানুষের বাড়িতে দিনমজুর ও ঝি এর কাজ করতেন।

এর মধ্যে বড় বোন আমেনার বিয়ে হয়। বিয়েতে অনেক খরচ হওয়ায় সংসার আরো ভেঙে পড়ে। যে কারণে সামান্য টাকার বিনিময়ে একজনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন ফাতেমা।

তিনি বলেন, ‘দুই বছর সেখানে কাজ করে বাড়িতে টাকা দেই। এরপর একদিন বাবা আমাকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। ভাবলাম লেখাপড়াটা আবার শুরু করতে পারব। কিন্তু বাড়িতে এসে দেখি আমার বিয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে। পাত্র আমার থেকে বয়সে অনেক বড়। আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।’

ফাতেমা যে বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন সেখানেই পরিচয় হয় ‘আশার আলো পাঠশালা’র প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত বর্মনের সঙ্গে। তিনিই ফাতেমার বাবা-মাকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। সেইসঙ্গে ফাতেমাকে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ফাতেমা বলেন, ‘এরপর আমি আশার আলো পাঠশালায় ভর্তি হই। শুরু করি নতুন জীবন। এখান থেকেই প্রাথমিক, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় সফলতার সঙ্গে পাশ করি। কলেজে ভর্তি হই। এখন পর্যন্ত আশার আলো সংগঠন আমাকে সহযোগিতা করছে। এখানেই লেখাপড়ার পাশাপাশি মাইক্রোসফটের দেয়া ল্যাবে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। স্বল্প সময়ের মধ্যে এমএস ওয়ার্ড, এক্সেল,পাওয়ার পয়েন্টসহ ব্যাসিক কম্পিউটারে দক্ষ হই।’

এর মধ্যেই ২০১৬ সালে আসেন মাইক্রোসফটের নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সোনিয়া বশির কবির। ফাতেমার দক্ষতা দেখেন এবং জীবনের গল্প শোনেন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মাইক্রোসফট এর তত্বাবধানে ফাতেমাকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করে। যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচার করা হয়। এরপর তারা ফাতেমাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মনোনীত করে।

ফাতেমা বলেন, ‘আমাকে অ্যাম্বাসেডর নিযুক্তির খবরটি চলতি মাসে বিশ্বজিত স্যারের মাধ্যমে জানানো হয়। এ সংবাদে আমি অত্যান্ত খুশি। আমার বাবা-মা এবং পরিবারের সবাই খুশি হয়েছে।’

ফাতেমা কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার পূর্ব রামখানা গ্রামের আয়নাল হক এবং ফরিদা বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। নিজের ইচ্ছাশক্তি এবং আশার আলো পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত বর্মনের সহযোগিতায় অনেক বড় জায়গায় পৌঁছেছেন।

তিনি এখন রায়গঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী। সেইসঙ্গে আশার আলো ওয়ার্ল্ড উইনার আইটির স্কুল অ্যান্ড কলেজের কম্পিউটার প্রশিক্ষক। এখানে তিনি বাল্য বিয়ের সমস্যায় থাকা মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তার প্রত্যাশা আইটি শিক্ষক হয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের সহযোগিতা করা এবং বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করে যাওয়া।

আরটিভি/এইচজে

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ