হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: আজ শনিবার পাকিস্তানের আলোচিত জয়নব হত্যা মামলার রায় হয়েছে। পাকিস্তানের অপরাধ দমন বিশেষ আদালত জয়নব হত্যার মূল আসামী ইমরানকে মোট ৩২ লাখ রুপি জারিমানাসহ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। আইটিসি এর বিচারক সাজ্জাদ আহমদ এ রায় দেন।
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো আদালতে সাইন্টিফিক প্রমাণাদি দাখিল করা হয়। এবং চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেয়ার পর মাত্র চার দিনে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
অবশ্য বিচার কাজ শেষ হওয়ার পর আদালত আরো চার দিন সময় নিয়ে তবেই রায় প্রকাশ করে।
ইমরান শুধু শিশু জয়নবই নয় তার মতো আরো ৭ শিশুকে যৌন নির্যাতনের পর হত্যা করেছে।
ইমরানের উকিল মাহের শাকিল মাঝ পথেই মামলা লড়া থেকে পিছু হটে যান। পরে আর কোন আইনজীবি এ মামলা লড়তে রাজি হন নি।
এক পর্যায়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অপরাধী ইমরানই আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে বলে, আমি অবুঝ নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করেছি। আমি আসলেই অনেক বড় অপরাধ করেছি। আমাকে যতো শাস্তিই দেয়া হবে তাই কম হবে। আমি আর কোন আইনি সহায়তা চাই না।
তার অপরাধ স্বীকারের পর আদালত আজ তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
এর আগে জয়নাবের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ওই বিক্ষোভের ঘটনায় দুইজন বিক্ষোভকারী নিহত হন।এদিকে এই রায়কে সামনে রেখে ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়েছিল। ওই রায়ের সময় জয়নাবের বাবা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ঠা জানুয়ারি কোরান শিক্ষার ক্লাসে যাবার পথে নিখোঁজ হয় পাকিস্তানের জয়নব আনসারী নামে ৬ বছরের ওই শিশু। কয়েক দিন পর তার মৃতদেহ পাওয়া যায় শহরের একটি আবর্জনা ফেলার জায়গায়। তাকে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে তখন খবর প্রকাশিত হয়।
পুলিশের ওই দিনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে জয়নবকে শেষবার জীবিত অবস্থায় দেখা গেছে। তাতে দেখা যায় একজন অচেনা লোকের হাত ধরে জয়নব হেঁটে যাচ্ছে।
বিবিসির সিকান্দার কিরমানি কসুর থেকে জানাচ্ছেন, তদন্তকারীরা গত এক বছরের মধ্যে ঠিক এই রকম ১০টি ঘটনা চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে ৬টি নিহত মেয়ের দেহে একই ব্যক্তির ডিএনএ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয় লোকেরা সন্দেহ করছেন, আক্রমণকারী একই ব্যক্তি এবং সে কাছাকাছি এলাকাতেই থাকে।
এই নিহতরা সবাই অল্পবয়েসী মেয়ে, এবং তারা সবাই তাদের বাড়ির খুব কাছাকাছি এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়।
ছয় জন মেয়ের সবার মৃতদেহই একই ভাবে আবর্জনার স্তুপ, বা পরিত্যক্ত বাড়িতে ফেলে দেয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। সব ক্ষেত্রেই তাদের পরিবারের বাস দু'মাইল এলাকার ভেতরে।'
বিবিসি, ডেইলি পাকিস্তান