আবদুল্লাহ তামিম: নবী কারিম সা. পৃথিবীতে আগমনের পর থেকেই পাল্টে গিয়েছিলো পৃথিবীর চেহারা। নবী সা. মানুষকে যেমন ভালোবেসেছেন মানুষও তাঁকে ভালোবেসেছেন প্রাণভরে।
রাসুল সা. এর কিছু পছন্দের জায়গা আছে। পছন্দের এই জায়গাগুলোতে রাসুল সা. সময় কাটাতে ভালোবাসতেন। সাহাবায়ে কেরামকেও এ স্থানগুলোর কথা বলেছেন। হাদিসেও এই স্থানগুলোর কথা এসেছে।
মক্কা মোকাররমার মসজিদুল হারাম
নবী করীম সা. কে আল্লাহ তায়ালাা বায়তুল্লাহয় নামাজ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন যে বায়তুল্লাহয় এক রাকাত নামাজ আদায় করবে অন্য মসজিদে ১০০ হাজার নামাজের সাওয়াব দেয়া হবে।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি তুমি (মক্কা) আল্লাহর সবচেয়ে উত্তম উত্তরাধিকারী আর তুমিই (আরব) আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় দেশ।’
মদিনা মুনাওয়ারার মসজিদুন নববী
মদিনায় অবস্থিত এই মসজিদে নববী, এই মসজিদের কাছেই রাসুল সা. এর রওজা মেবারক। এই মসজিদে নববী সম্পর্কে নবী সা. বলেন, হে আল্লাহ! আমরা বায়তুল্লাহ ও মসজিদে নববীকে খুব ভালোবাসি।
যখন নবী সা. সফর থেকে ফিরে এসে দূর থেকে মদীনার দেওয়াল দেখতে পেতেন তখনই তিনি মদীনায় তাড়াতাড়ি পৌছার জন্য উটকে দ্রুতগতিতে ছুটাতেন।
জেরুসালেমের মসজিদুল আকসা
রসূলুল্লাহ সা. সকল নবীকে মসজিদ আল-আকসাতে মেরাজের রাতে সকল নবীর সাথে মিলিত হয়েছিলেন। সালাম করেছিলেন সবাইকে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যা র চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল। (সুরা বনী ইসরাঈল-১)’
মদিনায় মসজিদ আল ক্বোবা
এই মসজিদটি ইসলামের প্রথম মসজিদ। রাসুল সা. এই মসজিদে অবস্থান করতে ভালোবাসতেন। এটিই ছিলো মদিনায় রাসুলের নির্মাণ করা প্রথম মসজিদ।
মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর রাসুল সা. এই মসজিদই প্রথম নির্মাণ করেন। সুযোগ পেলেই রাসুল সা. এই মসজিদে এসে সময় কাটাতে আল্লাহর ইবাদত করতে পছন্দ করতেন।
ইসলামের সূচনাতে ইসলামের অবস্থার স্মৃতিচারণ করতেন এই মসজিদে বসে। কল্পনায় হারিয়ে যেতেন অনেক বছর আগের বছরে। যখন মক্কার কাফেররা নির্যাতন করে রাসুল সা.কে মক্কা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো, মদিনায় এসে রাসুল সা. সর্ব প্রথম এই মসজিদ নির্মাণে করেন।
মদিনার উহুদ পর্বত
রাসুল সা. একবার উহুদ পাহারের কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম রাসুল সা. এর সাথে কথা বলছিলেন, রাসূল সা. উহুদ পাহারের দিকে আঙুল তুলে বললেন, ‘এই পাহাড় আমাদের ভালোবাসে আর আমরা তাকে ভালোবাসি।
মদিনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থান
জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে রাসুল সা. এর বহু আত্মীয়-সজনের কবর রয়ছে। বর্তমানে প্রায় ১০ হজার সাহবীর কবর আছে এখানে। তিনি প্রায় সময়ই জান্নাতুল বাকিতে যেতেন। অনেক্ষণ বসে থাকতেন। দোয়া করতেন।
চোখের পানি ফেলে আল্লাহর দরবারে তাদের কবরের আজাব ক্ষমা করার জন্য রোনাজারি করতেন। আর বেশি বেশি বলতেন ‘হে ঈমানদারগণ!
তোমরা নিরাপদ থাক। তোমাদের যা ওয়াদা করা হয়েছে তা তোমাদের কাছে এসে গেছে।’ বলতেন, হে আল্লাহ জান্নাতুল বাকির সমস্ত বাসিন্দাদের আপনি ক্ষমা করে দিন।
মদিনায় মসজিদে নববীর রাওজাহ
নবী কারীম সা. বলেছেন, আমার মিম্বর ও রওজার মাঝখানে রওজাতুম মিন রিয়াজিল জান্নাহ তথা জান্নাতের একটুকরো বাগান রয়েছে। তাই রাসুল সা. এই জায়গাটাকে ভালোবাসতেন।
এখানে বসে জান্নাতের ঘ্রাণ আর সুবাতাস হৃদয়ে মাখতেন।
সূত্র: সৌদি গ্যাজেট