আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমারের শরণার্থীদের আতঙ্কজনক দুরবস্থা সু চির উপলব্ধি করার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় গতকাল রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচির সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন।
বিবিসিকে বরিস বলেন, ‘আমরা যা দেখেছি, মনে হয় না হেলিকপ্টারে করে তিনি (সু চি) তা দেখেছেন।’
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে গত আগস্টে তল্লাশিচৌকিতে হামলার পর সেখানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এরপর প্রাণ বাঁচাতে দলে দলে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে রোহিঙ্গারা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, এ দফায় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই রোহিঙ্গাদের প্রায় সবাই অভিযোগ করেছে, মিয়ানমারের সেনারা রাখাইনে অভিযানের নামে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। বরিস এটা বিশ্বাস করেন কি না, তা জানতে চেয়েছিলেন বিবিসির সংবাদদাতা রীতা চক্রবর্তী।
জবাবে বরিস বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলে সু চি সম্পর্কে যা শুনেছি, তাতে আমার মনে হয় না রাখাইন রাজ্যে যা হয়েছে, এর পুরোটা খবর তাঁর (সু চি) কাছে এসেছে। জীবনে কখনো এমন ঘটনা দেখিনি। শত শত গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি পুরোপুরি একটি ধ্বংসযজ্ঞ।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এখন যা দরকার, তা হলো এমন নেতৃত্ব, যারা গৃহহীন এসব লোকজনকে নিজের ঘরে ফিরে যেতে সহায়তা করতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করবে।’
বরিস তাঁর সাক্ষাতে সু চির কাছে রোহিঙ্গাদের ‘ভয়াবহ পরিস্থিতির’ কথা তুলে ধরে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বরিস রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
এই বৈঠকের আগে বরিস রাখাইনে একটি সংক্ষিপ্ত পরিদর্শনেও যান।
এর আগে বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া তিনি গত শনিবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরও পরিদর্শন করেন।
এইচজে