মুজাহিদুল ইসলাম: শিশু অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ক সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো আমেরিকার মাটিতেই রয়েছে। কিন্তু এর অধিকাংশ রাজ্যে এখনো বাল্যবিবাহ অনুমোদিত।
২৫টি রাজ্যে অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স পর্যন্ত নির্ধারিত নেই। অন্যদিকে বাকি রাজ্যতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৩ রাখা হয়েছে।
আমেরিকায় শিশুবিয়ে বন্ধে আন্দোলনকারী “সবশেষে মুক্ত” নামক একটি আন্দোলনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ২০০০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ১৭ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের সংখ্যা দুই লক্ষের বেশি।
পাশাপাশি আলাস্কা, লুজিয়ানা ও উত্তর ক্যারোলিনায় ১২ বছর বয়সী মেয়েদের এঙ্গেজমেন্ট হয়। গত ১০ বছরে পুরো আমেরিকায় ১২ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ের সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ।
ফারিদি রিসের নেতৃত্ত্বাধীন এ সংগঠনটি আরো জানায়, অধিকাংশ বিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের মাঝে হয়ে থাকে; যেটা ধর্ষণসংলিষ্ট আইনের পরিপন্থী। কিন্তু বিয়ে এটার অনুমোদন দিয়ে দেয়।
কিছু কারণ—
শৈশবে বাধ্যতামূলক বিয়ের ভূক্তভোগী নারীদের প্রতিষ্ঠিত এ আন্দোলন মোটাদাগে বাল্যবিয়ের তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে।
১। ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক আচার ও অভ্যাস। ২। শিশু ও তার যৌন জীবনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের আগ্রহ। ৩। সবশেষে মহরের অর্থ দ্বারা উপকৃত হওয়া।
হিউম্যান রাইট ওয়াচ জানায়, ২০০০ হতে ২০১০ সালের মধ্যে ফ্লোরিডায় ১৬৪০০ এর বেশি বাল্যবিয়ে হয় এবং কেবলমাত্র নিউইয়র্কে ১৮ বছরের নিচে ৩৮৫০ জনের বেশি শিশুর বিয়ে হয়েছে।
আরবের বুড়ো শেখদের অসম বিয়ের খবরে মিডিয়া তোলপাড় হলেও মার্কিনিদের এসব বিয়ে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই বললেই চলে
অবশ্য সম্প্রতি নিউইয়র্কের গভর্নর শিশুবিয়ে বন্ধের জন্য সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
ইউনিসেফ জানায়, অল্পবয়সী মেয়েরা পড়ালেখা ছেড়েই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অনেক সময় তারা গর্ভবতীও হয়ে পড়ে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী গর্ভধারণ ও বাচ্চা জন্মদানে শিশুমৃত্যু হারের সংখ্যা ১৪ হতে ১৭ বছর বয়সী মায়েদের মধ্যে বেশি।
খোদ এই যুক্তরাষ্ট্র যেটা স্বাধীনতা ও জীবনাধিকারের মূলনীতিতে প্রতিষ্ঠিত; তার অধিকাংশ রাজ্যে শিশুবিয়ের অনুমোদন এখনও অব্যাহত রয়েছে, যা বিশ্বসভায় মানবাধিকার রফতানীকারী শক্তিশালী একটি দেশের স্পষ্ট নৈতিক দেউলিয়াত্বের পরিচয় বহন করে!!
সূত্র: আলজাজিরা