মুহাম্মদ বদরুজ্জামন
যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক, কলরব
বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির মত যায়গায় কলরবের যুগপূর্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আঈনুদ্দিন আল আজাদ রহ. কে কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে না দেয়ার এরচেয়ে সুন্দর প্রয়াস আর হতে পারে বলে মনে হয় না।
যুগপূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে এসে “কলরব” এমন একটা আয়োজনই দেয়ার দরকার ছিলো বলে মনে করি। আরো আশা করি এই নাশীদ মাহফিলের পারদে পারদে থাকবে ইসলামী সঙ্গীত জগতের মুকুটহীন সম্রাট মরহুম আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ. এর স্বরণ। থাকবে তার কালজয়ী কিছু সঙ্গীতের মুহুর্মুহু আয়োজন।
যুগপূর্তির এই নাশীদ মাহফিল কলরবের জন্য একটি মাইলফলক। এমন সময়ে এই আয়োজন অনেক জরুরি ছিলো বলা চলে। আজ শুক্রবারে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে হতে যাচ্ছে এই আউটস্টান্ডিং আয়োজন। আন্তর্জাতিক ব্যাক্তিবর্গ এবং বিশ্বসেরা কুরআনের কারীরাসহ বর্তমান সময়ের তারুণ্যের আইডল অনেক আলেমদেরই সরাসরি উপস্থিতি থাকছে এই আয়োজনে।
তারুণ্যের আইডল, এদেশে রাজনীতির ময়দানে ইসলামী আন্দোলনের (সংগঠনের নাম অর্থে নয়) প্রবাদ পুরুষ শায়খুল হাদিস মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম,হযরত থাকছেন প্রধান অতিথি হিসেবে। উদ্ভোধক হিসেবে থাকছেন মুফতি সৈয়দ এছহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের। যিনি কলরবের অন্যতম অভিভাবক।
এছাড়াও রাজনৈতিক এবং ইসলামি সাংস্কৃতিক অনেক ব্যাক্তিবর্গের অনবদ্য উপস্থিতি এই আয়োজনকে করে তুলবে মহিমান্বিত। সবচেয়ে ভালো লেগেছে কলরবের এই আয়োজন নিয়ে বার কয়েক খোঁজ খরব নিয়েছেন শায়খুল হাদীস রহ. এর সন্তান শায়খুল হাদিস মুফতি মামুনুল হকসহ অনেক বরেণ্য ব্যাক্তিবর্গ।
কলরবের জন্য এটা অনেক বড় অর্জন বলা চলে। যুগের পরিক্রমায় শত বাধা বিপত্তি পেরিয়েও কলরব এগিয়ে যাবে দুর্দান্ত গতিতে সে আশাটাই রাখছি রাব্বে কারিমের দরবারে। এই মহতি আয়োজনের নেতৃত্ব দেয়া সকলের প্রতি রইলো ভালোবাসামিশ্রিত সালাম। কারন অল্পবিস্তর হলেও নিজ চোখে তাদের পরিশ্রম দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
এত বিশাল আয়োজন খুব একটা সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব না এটা বলাই যায়। তাই তাদের পরিশ্রমের উত্তম ফলাফল তাদের প্রাপ্যই বলা যায়।
কলরব নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে এবং হচ্ছে। কোন কিছুর সাথে তেমন একটা সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও কান ঝালাপালা করার মত একটা অবস্থায় আমি নিজেও পড়েছিলাম কলরবের অনেকের সাথে একটু সম্পর্ক থাকার কারণে। এবং কলরব নিয়ে ফেসবুকে একদলের বিকৃত উল্লাস এবং অসুস্থ কার্যকলাপের বিরোধিতা করার কারণে অসংখ্য প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়েছি বারবার।
এমনকি প্রবাস থেকে পর্যন্ত কল করে অনেকে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলেছে কেবল কলরব নিয়ে। কলরবের আবেদন এবং গ্রহণযোগ্যতার প্রথম পরিচয় আমি তখনই পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিলো পথচ্যূত হতে চলা কলরবকে কেউ মমতায় আগলে রাখুক আমাদের করে। বন্ধ হোক একদলের ঘৃণা ছড়ানোর বিকৃত উপাখ্যাণ।
সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ কখনও ঘৃণা ছড়িয়ে এগিয়ে নেয়া যায় না এটা যত তাড়াতাড়ি তারা বুঝতে পারবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল বলে মনে করি।
কলরব “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ”র সন্তানতুল্য সম্পদ। কলরবের শেকড় থাকবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকদের হাতের মুঠোতেই এই বিশ্বাস আমি লালন করে চলি সব সময়। এক তরফা বিচার বিবেচনায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি কারো কারো মধ্যে হলেও কলরব এর মুল ধারা এখনও অবিকৃত অবস্থাতেই আছে এতটুকু শিওরিটি দেয়াই যায়।
“উড়ে এসে জুড়ে বসা” কিছু বিতর্কিত মানুষদের কলরবকে কুক্ষিগত করার বিকৃত প্রচেষ্টা সফল হবে না ইনশাআল্লাহ। যারা এসে তথাকথিত সরকারি সার্টিফিকেটের ধ্বজাধারী কলরব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা করেছে তাদের পায়ের নিচের মাটি যে ধিরে ধিরে সরে যাচ্ছে সেটা তারা কিছুটা হলেও এখন টের পেয়েছে বলে মনে হয়।
পথচ্যূত দু একজনের শত প্রচেষ্টাও কলরবকে ধ্বংশ হতে দেবে না এটা কলরবের কঠোর নেতৃত্বের দিকে তাকালেই বুঝা যায়। তৃণমুল পর্যায়ে শাখা গঠনের নামে কেউ কেউ যে অসভ্যতামী এবং ঘৃণা তৈরির কাজ করে যাচ্ছে সেটা প্রতিহত করে কলরবকে অবিকৃত অবস্থায় রাখার পুর্ণ প্রচেষ্টায় সবাই ব্রতী হবে বলে বিশ্বাস করি।
যত কিছুই হয়েছে নিজে একটা বিশ্বাসের মধ্যে ছিলাম যে স্বার্থবাজরা কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে সময় হলেই। সেই তাদের কালের গর্ভে হারানোর সময়টা এসে গেছে মনে হয়।
ফেৎনা ছড়িয়ে আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ. এর পবিত্র জন্মভূমিকে কলূষিত করতে যাওয়া সেই “তারা” চরম অপমানিত হয়েই সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়েছে দেখে আমার সেই বিশ্বাসটা আরো মজবুত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
কলরবের কেরাত-নাশিদ মাহফিলে থাকছেন যারা