কাউসার লাবীব
প্রতিবেদক
রাজধানীতে শুক্রবার অনলাইন নিউজপোর্টাল আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের উদ্যোগে রাজধানীর অনুষ্ঠিত হলো অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সম্মেলন।
তোপখানা রোডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি মিলনায়তনে বিকেলে তরুণদের এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব।
প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিন্তাশীল আলেম, রাজনীতিক ও সংগঠক খতিব তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ার ইসলামের প্রধান সম্পাদক মুফতি আমিমুল ইহসান।
সভায় ‘মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া সঙ্কট ও সমাধান’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন দেশের আলোচিত তরুণ, লেখক, সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টগণ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির আলোচনা করেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য কেন্দ্র বাংলাদেশের পরিচালক, আরবি ভাষাবিদ মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী।
তিনি বলেন, আমরা এখন বাস করছি ভার্চুয়াল জগতে। চাইলেই এখান থেকে সরে আসতে পারব না। চাইলে একে পাশ কাটিয়ে চলতে পারব না। এ জগতকে আমাদের শুদ্ধ করে তুলতে হবে। সুন্দর করে তুলতে হবে।
এ জগতকে সুন্দর ও শুদ্ধ করে তোলা কঠিন কিছু নয়। আমরা যদি নিজেকে মনে করি ‘আমি একজন ইসলামের দায়ি। আমি যা বলি, যা লিখি তা যেন হয় কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী’। তাহলেই আমাদের এ ভার্চুয়াল জগত হয়ে উঠবে শুদ্ধ, সুন্দর আর প্রাণবন্ত।
আমাদের মনে রাখতে হবে ‘আমি একদিন চলে যাব, কিন্তু আমার এ লেখাগুলো থেকে যাবে। এ জবাব আমার প্রভুর কাছে দিতে হবে। প্রত্যেকটি শব্দের জন্য স্রষ্টার কাছে হিসেব দিতে হবে।’
মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন, অনলাইন মিডিয়াগুলো একটি লেখার বিষয়ে পাঠকের মতামত ব্যক্ত করার, সমালোচনা করার সুযোগ রেখেছেন। এটা আমরা যারা পাঠক আছি তাদের জন্য সৌভাগ্য। আমরা আমাদের মত ও চিন্তা তাদের জানাতে পারি। তাদের ভুল হলে ধরিয়ে দিতে পারি।
কিন্তু এর ফলে এমন কিছু পাঠক এ জগতে আগমন করেছে, ‘আমাদের সব বিষয়েই নেতিবাচক মন্তব্য করতে হবে’ যত ভালো কিছুই হোক না কেন সেখানে থাকে আমাদের নেতিবাচক মন্তব্য।থাকে ব্যক্তিগত আক্রোশের ছোঁয়া। এ বিষয়টি খুবই লজ্জা এবং হতাশাজনক।
আমরা কেন মৌমাছির মতো হচ্ছি না? যে শুধু বসে ফুলের রেণুতে। আমরা কেন নোংরা মাছির চরিত্র নিজের মধ্যে স্থাপন করছি? যে খাবারেও বসে আবার ময়লার স্তুপেও বসে। আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি, আমাদের চাল-চলন, বাক্য-বাচন, চিন্তা-চেতনা, সংশোধন-সমালোচনা সবকিছু হবে শ্রেষ্ঠ পন্থায়। এটাই তো কাম্য।
আমাদের সমালোচনার ধরণ খুবই নিম্নমানের। এ জগতে উৎকর্ষের স্বাক্ষর রাখতে হলে আমাদের আগে সমালোচনার ধরণ শিখতে হবে। সমালোচনা যেন না হয় রাগ ঝাড়ার মাধ্যম। এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তিনি বলেন, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখার সময় আমাদের ওই বাণীর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ‘শোনার চেয়ে বলব কম আর বলার চেয়ে লিখব কম।’ যে বিষয়েই লিখব বা মন্তব্য করব সে বিষয়ে প্রচুর পরিমাণে চিন্তাভাবনা ও গবেষণ করে লিখব ও মন্তব্য করব।
চিন্তা আর গবেষণার মাত্রা বাড়াতে হবে। তাহলে অযাচিত সমালোচনার ধার আমাদের থেকে দূর হবে।
আওয়ার ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক রোকন রাইয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সভাপতি জহির উদ্দিন বাবর, শীলনবাংলা সম্পাদক মাসউদুল কাদির, নূর বিডি ডটকম সম্পাদক সৈয়দ শামসুল হুদা, যুবকণ্ঠের সম্পাদক ও মাদরাসা বাইতুল মুমিনের প্রিন্সিপাল মুফতি নেয়ামতুল্লাহ আমিন, ইসলামী লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুনীরুল ইসলাম, আলোকিত বাংলাদেশের সাব এডিটর আলী হাসান তৈয়ব, লেখক ও অনুবাদক আবদুস সাত্তার আল আইনী, লেখক ও গবেষক মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী, আলেম ও লেখক মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেমী, পির ইয়েমেনী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইমরানুল বারী সিরাজী, কলামিস্ট মাওলানা মাহমুদুল হাসান সিরাজী, কিশোরস্বপ্ন নির্বাহী সম্পাদক জিয়াউল আশরাফ, রাহমানী পয়গামের সহকারী সম্পাদক এহসানুল হক, মাসিক নতুন ডাক সম্পাদক শাকিল আদনান, এক্টিভিস্ট মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ আরমান, রকমারি ডটকমের এহসানুল হক, সবার খবর সম্পাদক আবদুল গাফফার, সৃজন সম্পাদক আমিন ইকবাল, ইসলামী লেখক ফোরাম অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ তাসনিম, কারেন্ট বাংলা সম্পাদক আহসান শরিফ, লেখক ফারুক ফেরদৌস, কবি ইফতেখার জামিল, আল জামিয়া’র সহ সম্পাদক সুলাইমান সাদী, এ এস এম মাহমুদ হাসান, আদুল্লাহ তামিম, উবায়দুল্লাহ সাআদ, আমিন হানিফ, আমিন মুনশি, উবায়দুল হক খানসহ অারো অনেক তরুণ লেখক ও এক্টিভিস্ট।
মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকীর পুরো বক্তব্য শুনুন ভিডিওতে
‘হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার মতো কেউ কেন আসছেন না যার পেছনে আমরা ছুটে যাবো’