আওয়ার ইসলাম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নিজের বহিষ্কার চেয়েছেন একজন সহযোগী অধ্যাপক। গত মঙ্গলবার উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে এই অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
বহিষ্কার চাওয়া শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পড়ান।
গতকাল শুক্রবার ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে বামপন্থী নেতাকর্মীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে এই কথা বলেছেন তানজীম।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন্ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিভিন্ন নেতাকর্মীর ওপর ছাত্রলীগের ‘হামলার’ বিচার দবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট এই এক সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত সরকারি কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে মেয়েদের ‘যৌন নিপীড়নের’ অভিযোগের কোনো সুরাহা না করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনাও করেছেন তানজীম উদ্দিন খান।
এই সহযোগী অধ্যাপক বলেন, ‘আমি বহিরাগত, আমি সরকারের ক্ষমতার বলয়ের বাইরের লোক, তাই শুধু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কেন, আমাকেও তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করুন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানীর কড়া সমালোচনা করে এই শিক্ষক বলেন, ‘তার মতো একজন মিথ্যুককে শুধু প্রক্টর থেকে নয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা উচিত। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার কোনো যোগ্যতা তার নেই।’
সংহতি সমাবেশে বিভিন্ন বামপন্থী দলের শীর্ষ নেতারাও একাত্মতা জানান। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের কঠোর সমালোচনা করেন।
গত ১৫ জুলাই সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়া মেয়েদেরকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হয়রানি করেছেন অভিযোগ এনে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে আন্দোলনে নামে বামপন্থী শিক্ষার্থীরা।
আর ১৭ জানুয়ারি প্রক্টেরের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের পর ২৩ জানুয়ারি তারা উপাচার্য আখতারুজ্জামানের কার্যালয় ঘেরাও করতে যায়। ফটক ভেঙে তারা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। বেলা সোয়া ১২টা থেকে সোয়া তিনটা পর্যন্ত উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
পরে দুই পক্ষে হাতাহাতি এবং সব শেষে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা রড দিয়ে বেদম পিটুনি দেয় বিক্ষোভকারীদের।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সোমবার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ডেকেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। সেই সঙ্গে বুধবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।
প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ইমরান হাবিব রুমনের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন আনু মোহাম্মাদ, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অভিনু কিবরিয়া, অধ্যাপক এম এম আকাশ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।