ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ
লেখক, গবেষক ও মুহাদ্দিস
সমস্যার মূল কারণ হল ‘যিকরুল্লাহর’ প্রতি অবহেলা। বিশ্বাস করুন; চলমান সব সংকট এই একই কারণে সৃষ্টি হয়েছে। আর আসমানী সকল নুসরত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন উদ্ধার পেতে হলেও ঠিক ঐ একই পথ। আবার সকলে যিকরুল্লাহকে মজবুত ভাবে ধরুন। বাস, সমাধান অবশ্যই হবে।
প্রতিষ্ঠালগ্নে যিকরুল্লাহকে যেই শেকলের উপর রাখা হয়েছিল বর্তমানে সেই শেকলের উপর নেই।গত ত্রিশ বছর আগে আমরা যিকরুল্লাহকে কিরূপ দেখেছিলাম। আর এখন কিরূপ দেখতে পাচ্ছি। মনের ভিতর প্রশ্ন জাগে যে, আজ যিকরুল্লাহ কেন পরিত্যাজ্য হয়ে গেল? কেন অপব্যাখ্যা ও তামাশার আকার ধারন করল?
আপসুস! বড় আপসুস! যেই সিঁড়ি বেয়ে আপনি আকাশে উঠলেন, উঠা মাত্রই সেই সিঁড়ি পা দিয়ে সরিয়ে দিলেন। হায় হায়। আরে রেলগাড়ী যেমন বাসের রাস্তা দিয়ে চলা কঠিন; আহলে দেওবন্দের গাড়ীও তেমনি তথাকথিত গায়রে মুকাল্লিদদের বাতলানো রাস্তায় চলা কঠিন।
যিকরুল্লাহকে ছেড়ে দিলে শয়তান কাঁধে চড়ে বসে। কোন রক্ষা নেই। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন;
وَمَنْ يَعْشُ عَنْ ذِكْرِ الرَّحْمَنِ نُقَيِّضْ لَهُ شَيْطَانًا فَهُوَ لَهُ قَرِينٌ وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ مُهْتَدُونَ
‘যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর যিকর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আমি তার উপর (শক্তিশালী) শয়তান ভর করে দেই। অতঃপর সেই শয়তান হয়ে যায় তার সার্বক্ষণিকের সহচর। এই শয়তানরা মানুষকে দীনের সহীহ পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে আর তারা ভাবে তারা বুঝি সহীহ পথে আছে।’ (সূরা যুখরুফ, আয়াত ৩৬, ৩৭)
কাজেই রাগ করবেন না। এখন উদ্ধার পেতে হলে সেই একই পথ; আর তা হল আবার ‘যিকরুল্লাহকে’ কঠিন ভাবে ধরুন; যেভাবে ধরে ছিলেন আপনার পূর্ব পুরুষগণ। সাবধান! দুশমনের কথায় কেউ যিকরুল্লাহর মনগড়া তাবীল কিংবা তাহরীফ করবেন না। হালাক হয়ে যাবেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন;
إِنَّ الَّذِينَ اتَّقَوْا إِذَا مَسَّهُمْ طَائِفٌ مِنَ الشَّيْطَانِ تَذَكَّرُوا فَإِذَا هُمْ مُبْصِرُونَ وَإِخْوَانُهُمْ يَمُدُّونَهُمْ فِي الْغَيِّ ثُمَّ لَا يُقْصِرُونَ
মুত্তাকী লোকদেরকে শয়তানের গোষ্টিরা কখনো পাকড়াও করে ফেললে তারা বাস যিকরুল্লাহকে কঠিনভাবে আঁকড়ে ধরে; তখন তাদের চোখ খুলে যায়। (আর তারা নাজাতের পথ পেয়ে যায়।) তবে তারপরেও শয়তানের গোষ্টিরা ওদেরকে ভ্রান্তির দিকে টানতেই থাকে। শয়তানরা টানা বন্ধ করে না। (সূরা আরাফ, ২০১, ২০২)
মেহেরবানী করে একটু ভেবে দেখুন, সংকট উত্তরনের জন্য এখানে পবিত্র কুরআন আপনাকে কত বড় সমাধান দিয়ে রেখেছে।