আওয়ার ইসলাম : জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনে থাকা ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে বসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষকদের দাবি পূরণের ব্যাপারে সুস্পষ্ট আশ্বাস না দিলেও তিনি বিষয়টি সরকারের উচ্চ মহলে তুলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তার এই আশ্বাসে মন গলেনি শিক্ষকদের। আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন সুস্পষ্ট আশ্বাস ছাড়া তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।
রবিবার কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অফিসকক্ষে আন্দোলনরত বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে এক সভায় মিলিত হন শিক্ষামন্ত্রী। সভায় প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঁইয়া, অশোক কুমার বিশ্বাস ও রওনক মাহমুদ, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বিল্লাল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আন্দোলনরত বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সক্রিয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। শিগগির এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে বলেও জানান নাহিদ।
সভাশেষে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী ও মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সভার সিদ্ধান্ত অবহিত করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত আমরণ অনশনকারী শিক্ষকদের নিয়ে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি এই তীব্র শীতের মধ্যে আর কষ্ট না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনাদের দাবি ও সমস্যা যথাযথভাবে আমরা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব। আপনারা ঘরে ফিরে যান।
তবে শিক্ষামন্ত্রীর এই কথায় কর্মসূচি প্রত্যাহার করেননি মাদ্রাসা শিক্ষকরা। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, উনি (অর্থমন্ত্রী) বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হতে পারিনি। আমরা মন্ত্রীকে বলেছি, আপনি অথবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি আমাদের অনশনস্থলে আসুক। তারপর স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে যাক, আমরা চলে যাব। কিন্তু এর আগে আমরা যাব না।’
গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন করেছিল নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার এপিএস সাজ্জাদ হাসান এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার আশ্বাসে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এলাকায় ফিরে যান।
ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরাও সেই সময়েই আন্দোলন শুরু করেন। লাগাতার অবস্থানের পর তার আমরণ অনশনের ডাক দেন। গত ছয় দিন ধরে তাদের এই কর্মসূচি চলছে। তবে তাদের বিষয়টি গণমাধ্যমে তেমন গুরুত্ব পায়নি।