মুফতি লুৎফর রহমান ফরায়েজী
এমন সব বিষয়ে লিখতে হবে কল্পনায়ও ভাবিনি কোনদিন। নিয়তির লিখন। বিক্ষত হৃদয়ের রক্তাশ্রুতে লিখছি বেদনার কথা।
মাওলানা সাদ কান্ধলভি। আমাদের। আমাদেরই ঘরের সদস্য। কুরআন ও হাদিস সম্পর্কে তার বিভিন্ন অপব্যাক্ষামূলক বক্তব্য চলছিল বেশ ক'বছর ধরেই। যা সাধারণ তাবলিগিদের বোধগম্য হবার কথা নয়। কিন্তু কুরআন ও হাদিস সম্পর্কে অভিজ্ঞ উলামাদের দৃষ্টিতে ধরা পড়ছিল। অনেকেই সতর্কতার সাথে বিষয়গুলো তুলে ধরছিলেন।
আমরা কোন ব্যক্তি পূজারি নই। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত কোন ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভরশীল নয়। একারণেই তাবলিগি বয়ানের আলোচকের নামে পোস্টারিং হয় না। মাইকিং হয় না। নাম ঘোষণা হয় না। ব্যক্তি নয়, মাকসাদ আমাদের দ্বীন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ব্যক্তির অন্ধভক্তিতে ডুবে যাই প্রায়ই। আল্লাহ হিফাযত করুন।
মাওলানা সাদ বেশ কিছু ভুল করেছেন। অনেকগুলো মারাত্মক সব বক্তব্য দিয়ে দ্বীনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছেন।
এটা বলা উলামাদের দায়িত্ব। বলতেই হবে। এ দায়িত্ব পালন না করলে উলামাগণ আল্লাহর কাছে পাকরাও হবেন।
একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বক্তব্য এর ভুল তুলে ধরা পুরো তাবলিগি মেহনতের বিরোধিতা নয়। হতে পারে না।
শুনেছি তিনি তওবা করেছেন। রুজু করেছেন। প্রকৃত অবস্থা আমরা অন্তত আমি জানি না। যদি করে থাকেন আলহামদুলিল্লাহ।
এমনটিই হওয়া উচিত। খাঁটি মুমিন এমনি হয়। দোষ ধরিয়ে দিলে ক্ষীপ্ত হয় না। বরং শুভাকাঙ্ক্ষীর স্বীকৃতি দিয়ে বুকে জড়িয়ে নেয়। দুআ করে।
তিনি রুজু করে থাকলে তার ব্যাপারে পূর্বের কথার উদ্ধৃতি দিয়ে অপমান করা, সমালোচনা করা বৈধ হবে না।
আর গালি? সেতো কোন কাফিরকেও দেয়া যায় না। তাহলে একজন মুসলিমকে কী করে দেয়া যেতে পারে?
জবান সমঝে কথা বলি। আমরা কারো বিরোধিতা বা পক্ষাবলম্বন নিজের স্বার্থে নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় করে থাকি। তাই প্রতিবাদের নামে নিজেই গোনাহে না জড়াই। বাড়াবাড়িতে লিপ্ত না হই।
দাওয়াত ও তাবলীগকে ব্যক্তিপূজা মুক্ত স্বাধীনভাবে চলতে দিন। নিজস্ব গতিতে চলতে দিন। মাঠে ময়দানের বক্তাদের তাবলিগের মঞ্চে বক্তব্য দিতে সুযোগ দিয়ে এ মেহনতের নিজস্বতা বিনষ্টের মত আত্মঘাতি কাজ করবেন না। তাবলিগের মঞ্চ তাদের হাতেই থাকুক যারা অহর্নিশি এ ময়দানে বিচরণ করছেন।
অভিজ্ঞ উলামাগণ থাকুক চারিদিকে পাহারাদার হিসেবে। আল্লাহ সহজ করে দিন। আমাদের সমঝকে দ্বীন বুঝার অনুকূল করে দিন। আমীন।
সঙ্কটে তাবলিগ: সমাধান মাওলানা সাদ কান্ধলভির হাতে!