ইশতিয়াক সিদ্দিকী, হাটহাজারী প্রতিনিধি: হেফাজতে ইসলামের আমিরে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী’র সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন কানাডিয়ান হাই কমিশনের দুই সহকারী হাই কমিশনার। সোমবার তারা আমীরে হেফাজতের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। চট্টগ্রামের হাটহাজারীস্থ হেফজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় তারা হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীকে কানাডা ভ্রমণের আহ্বান জানান।
সোমবার বিকেলে কানাডিয়ান দুই সহকারী হাই কমিশনার ব্যারিস্টার ব্রিস্টম্যান (কাউন্সেলর রাজনৈতিক) ও জেমস্ স্টোন (প্রধান সচিব, রাজনৈতিক সর্ম্পক) আল্লামা আহমাদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাতে এক ঘন্টাব্যাপী এক বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে কোন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে মঈনুদ্দীন রুহি সংবাদমাধ্যমকে জানান, প্রায় ৯০ ভাগ মুসলমানের এ দেশে ভিন্ন ধমালর্ম্বীদের জীবনযাত্রার মান এবং তাদের নিয়ে হেফাজতের অবস্থান, সম্প্রতিক জঙ্গিবাদ, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রচার সম্পাদক মাওলানা আ ন ম আহমদ উল্লাহ জানান, সাক্ষাতকালে কানাডিয়ান প্রতিনিধি দলটি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, হেফাজত, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আহমদ শফির সঙ্গে কথা বলেন।
প্রতিনিধিরা হেফাজত আমিরকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা পূর্ণ অধিকার ভোগ করছে। সরকারসহ দেশের জনগণ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। ইসলাম সংখ্যালঘুদেরকে যে অধিকার দিয়েছে এবং নিরাপত্তার বিধান করেছে তা এদেশের মুসলমানরাও দিয়ে আসছেন।’
কানাডিয়ান প্রতিনিধি দলটিকে আহমদ শফি আরও বলেন, ‘ইসলাম কখনো জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। নিরীহ মানুষ হত্যা, জোর-জুলুম এবং অন্যায়ভাবে মানুষের ধন-সম্পদ লুণ্ঠন ইসলামে জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। এসব অপরাধের জন্য অপরাধের পরিমাণ বিবেচনা করে ইসলাম শাস্তির বিধানও করেছে।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আল্লামা শফির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও স্থানীয় মগদস্যুদের নির্মম, পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদেরকে সরকার শরণার্থীর মর্যাদা দিয়ে আশ্রয় দিয়েছে। এদেশের মানুষ বিশেষত আলেম-উলামারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের দিকে সার্বিক সাহায্যের হাত বাডিয়ে দিয়েছেন।’
এছাড়া বৈঠকে তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হেফাজত সর্ম্পক আছে কিনা তা জানতে চান। এ সময় হেফাজত আমির তাদেরকে নিশ্চিত করেন, হেফাজত কোনো রাজনৈতিক দল নয় এবং কোনো দলকেও সমর্থন করে না।
বৈঠকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহি, হাজী মোজাম্মেল হক, মাওলানা সাদেক উল্যাহ, মাওলানা আলমগীর, মাওলানা ওয়ালি উল্যাহ, মাওলানা হারুনুর রশিদ ও মাওলানা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।