আওয়ার ইসলাম: দেওঘর পশুখাদ্য মামলায় সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লক্ষ টাকার জরিমানা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের ৷
বেশ ক’দিন ধরেই নানাকারণে পিছিয়ে যাচ্ছিল লালুপ্রসাদ যাদবের সাজা ঘোষণা। আইনজীবীর মৃত্যু হওয়ায় সাজা ঘোষণা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল । আজ রাঁচির বিশেষ আদালতে দুপুর দু’টোয় সাজা ঘোষণা হওয়ার থাকলেও পরে সেটা বিকেল চারটে করা হয় ৷ শেষপর্যন্ত রায় বেরলো ৷
বিচারপতি লালু প্রসাদের সাড়ে তিন বছরের শাস্তি ঘোষণা করেছেন ৷ সঙ্গে পাঁচ লক্ষ টাকার জরিমানা ৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য হাইকোর্টে যাবেন লালু প্রসাদ এবং তাঁর দল ৷ জামিনের আবেদন করবেন আরজেডি প্রধান ৷
সাজা ঘোষণার পর এদিন লালুর আইনজীবী জানান, ‘‘ রায়ের কপির জন্য অপেক্ষা করছি ৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব ৷’’
শনিবার সকাল থেকেই আদালত চত্বরে আরজেডি কর্মীদের ভিড় ছিল। সিবিআই আদালত যাই সাজা দিক, তাকে চ্যালেঞ্জ করে দল যে হাইকোর্টে যাবে তা আগেই জানানো হয়। শেষপর্যন্ত সেটাই ঘটল ৷
১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে দেওঘর ট্রেজারি থেকে বিপুল অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়। তখন অবিভক্ত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। ওই মামলায় গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে রাঁচির বিরসা মুণ্ডা জেলে ছিলেন আরজেডি প্রধান।
২০১৩-য় প্রথম এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন লালু। সেসময় তাঁর ৫ বছরের জেল হয়, বাতিল হয় সাংসদ পদ, ভোটে দাঁড়ানো নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু সে বছরই ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়ে যান লালু।
জাল নথি দেখিয়ে ১৯৯১-৯৪-এ বিহারের বিভিন্ন সরকারি কোষাগার থেকে ৯৫০ কোটি টাকা তুলে নেওয়া সংক্রান্ত মামলাই হল পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলা। পশুখাদ্য কেনার জন্য বরাদ্দ রাজ্য সরকারের ওই অর্থ বিহারের রাজনীতিক ও সরকারি আধিকারিকরা নয়ছয় করেন বলে অভিযোগ। সে সময় লালু ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন লালুপ্রসাদ যাদব। ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁর। শুক্রবারই তিনি আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন যে তাঁর শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রেখেই যেন শাস্তি ঘোষণা করা হয় ৷
এই মামলায় মোট অভিযুক্ত ৩৪ জন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। সেই সময় ক্ষমতায় না থাকায় আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্রকে গত ২৩ জিসেম্বরেই বেকসুর খালাস করে দিয়েছিলেন বিচারক।
মুক্তি পেয়েছেন আরও পাঁচ অভিযুক্ত। দোষীদের তালিকায় রয়েছেন লালু-সহ ১৭ জন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার বেক জুলিয়াস, ফুলচাঁদ সিং এবং মহেশপ্রসাদ। রয়েছেন এক বাঙালি অফিসার সুবীর ভট্টাচার্যও।
এইচজে