আওয়ার ইসলাম: দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সংসদ শাহাদাত পিয়াসি ফিলিস্তিনিদেরকে ফাঁসির দণ্ড দেয়ার অনুমতি দিয়ে যে আইন পাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
ইসরাইলের সংসদে গত বুধবার ৫২ ভোটে প্রস্তাবটি পাশ হয় তবে ৪২ জন সদস্য প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অধিকৃত বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ফিলিস্তিনিদের ইসরাইল-মার্কিন বিরোধী ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গেছে এবং আন্দোলন আরো বেগবান হয়েছে।
এ ছাড়া, ইসরাইলি সংসদ গত মঙ্গলবার ঐক্যবদ্ধ বায়তুল মোকাদ্দাসের বিষয়েও আরেকটি প্রস্তাব পাশ করে। এই প্রস্তাব পাশের ফলে পুরো বায়তুল মোকাদ্দাসের ওপর ইসরাইলের কর্তৃত্ব বা দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ যদি ইসরাইলের সঙ্গে আপোষ না করে তাহলে তাদেরকে অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত ৬ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার পর আমেরিকা ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের শাহাদাত পিয়াসি হামলা বন্ধের জন্য ইসরাইলি সংসদ ফাঁসির দণ্ডের অনুমতি দিয়ে প্রস্তাব পাশ করে। এর ফলে সহিংসতা আরো বিস্তার লাভ করেছে।
ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এভিগডোর লিবারম্যানের নেতৃত্বাধীন দল ওই প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেছিল। ওই প্রস্তাব পাশের ফলে খোদ ইসরাইলের জনমনে এ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে যে, ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পরিণতি তাদের জন্য ভালো হবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনিদের শাহাদাত পিয়াসি হামলা ঠেকানোর জন্য ইসরাইলের সংসদ ফাঁসির দণ্ড দেয়ার প্রস্তাব পাশ করলেও তারা ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন তো ঠেকাতে পারবেই না বরং এতে করে ফিলিস্তিনিদের মনোবল আরো শক্তিশালী হবে।
ইসরাইলি দৈনিক হারেতজ লিখেছে, সংসদে ওই প্রস্তাব পাশের ফলে শাহাদাত পিয়াসি হামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং আন্দোলন আরো বেগবান হওয়ার পাশাপাশি পাশ্চাত্য ও আরব দেশগুলোতেও ইসরাইলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা 'শাবাক' উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
[জীবন সাজাতে ইসলামী যিন্দেগী অ্যাপটি ডাউনলোড করুন
শরীরকে ব্যথামুক্ত রাখতে চিকিৎসা নিন আশশিফা হিজামাহ সেন্টারে]
এ কারণে ইসরাইলের 'জিউস হোম পার্টি'র প্রধান নাফতালি বেননেট এবং 'শাবাকের প্রধান নাদাফ আর্গম্যান ওই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন।
যাইহোক, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের শাহাদাত পিয়াসি হামলা কিংবা ইন্তিফাদা গণআন্দোলন একটি বৈধ প্রতিরোধ সংগ্রাম এবং এটি জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারায় স্বীকৃত। কারণ ফিলিস্তিনিরা একটি আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং নিজ মাতৃভূমির জন্য লড়াই করছে। তাই ইসরাইলি সংসদ যে প্রস্তাব পাশ করেছে তা নিঃসন্দেহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াজ মালেকি এবং হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান সালেহ আল আরওয়ারি ইসরাইলি সংসদের ওই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। প্রস্তাবটি এতোটাই নিন্দনীয় যে ইউরোপীয় ইউনিয়নও একে একটি জাতির জন্য অবমাননাকর বলে অভিহিত করেছে।
সূত্র: পার্সটুডে