গাজী ইয়াকুব: ঘর থেকে বেড়িয়ে রিকশায় উঠতে যাবো এমন সময় রিকশাওয়ালা বলে ডাক দিতেই ১৪/১৫ বছরের একটি ছেলেকে দেখলাম। গায়ে জুব্বা মাথায় পাঁচকল্লি টুপি পরিহিত অবস্থায় রিকশাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিবেকের তাড়নায় রিকশাটিতে না উঠে পরম মমতায় তাকেই কাছে ডাকলাম।
কিরে বাবা তুমি এই বয়সে এই পোশাকে রিকশা চালাচ্ছো! কোন জামাতে (ক্লাস) পড়ো! বাড়িই বা কোথায়!
জ্বী আমার বাড়ি যশোর, কাফিয়াতে (এসএসসি) পড়ি।
তো এখন কি ছুটি, যে কারণে তুমি রিকশা চালাচ্ছো?
হা আমাদের ওখানে আঞ্চলিক ইজতেমার কারণে মাদরাসা বন্ধ হওয়ায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে যা হয় তা নিয়ে আবার মাদরাসায় চলে যাবো!
আমি কারণ জিজ্ঞেস করতেই ও বলল, স্কুলে পড়লে বাড়ি থেকে খরচপাতি দিবে কিন্তু মাদরাসায় পড়লে কোন কিছুই দিবে না বলে জানিয়েছে। তাই কষ্ট হলেও খরচ যোগাতে আমার আর কোন পথ নেই। এক বন্ধুর সহযোগিতায় ছুটি পেলেই ঢাকায় এসে রিকশা চালাই!
কি সুন্দর নুরানি মুখায়ব, কি সাদাসিধে তার বাচন! আর যাইহোক এমন মুখ দিয়ে অন্তত একটি শব্দও মিথ্যে বের হবে না, কিতাবের পাতায় আল্লাহ এবং তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাজি খুশি করার মানসে ইলম শিখতে কতো বুযুর্গানে দ্বীনের আলোচনাই না পড়েছি, তাদের কঠিনতর কুরবানির ইতিহাস পড়ে কতোই না চোখ ভিজিয়েছি! আর আজ আমি তেমনি একজন ত্যাগী মানুষকে বাস্তবেই দেখতে পাচ্ছি।
দারুন অ্যাপটি ইনস্টল করতে ক্লিক করুন
পকেটে থাকা মানিব্যাগটা কেন জানি এখন আর নিজের মনে হচ্ছিলো না, তাতে যা ছিলো আশাকরি আসছে রমজান পর্যন্ত এই বয়সে ইলম শিখতে তার আর রিকশায় পেটেল মারতে হবে না।
নাম্বারটা লিখে বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিদায় নিতে গিয়ে কেন জানি নিজের অজান্তেই চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো!!
গাজী ইয়াকুবের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে