শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বিএনপি নেতাদের চুপ থাকার পরামর্শ দিলেন খালেদা জিয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

অনলাইন ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে গত কিছু দিন থেকে সিরিজ বৈঠক করে চলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ছাড়াও তিনি আলাদা করেও বসছেন তাদের সঙ্গে।

এসব বৈঠকে বর্তমান রাজনীতির আলোকে কেন্দ্রীয় নেতাদের চুপ থাকারই পরামর্শ দিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়সহ দলের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও আন্দোলনসহ দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ইস্যুতে আপাতত দলের সিনিয়র নেতাদের চুপচাপ থাকতে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গত কয়েকদিনে দলের স্থায়ী কমিটির পাঁচজন সদস্যসহ বেশ কজন সিনিয়র নেতা দেখা করতে গেলে তাদের সবাইকে একই পরামর্শ দেন তিনি।

বললেন, মন্ত্রী-এমপি কিংবা সরকারি দলের নেতারা যত উগ্র কথাবার্তা কিংবা যে যা-ই বলুক না কেন— তাদের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। এর পাশাপাশি দলীয় ঘরানার কয়েকজন বুদ্ধিজীবীও সাক্ষাৎ করেছেন তাঁর সঙ্গে।

তাদের মধ্যে কেউ কেউ মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তার জবাবে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা এগুলো। এটা দেশি-বিদেশি সবাই জানেন।

অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত নানা ধরনের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যাওয়া শুরু হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে। এসব ব্যাপারে তিনি নিজেও অনেকটা চুপচাপ নীতি পালন করছেন। তবে সবকিছুই তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি দলের নেতাদের সাম্প্রতিক নানা উসকানিমূলক বক্তব্যের জবাবে বিএনপি নেতাদের চুপচাপ থাকার এই নির্দেশ দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।

তিনি বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের ‘টপ টু বটম’ কমবেশি সবাই এ ধরনের উসকানি দিয়ে বক্তব্য রাখছেন।

জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ বৈঠকেও একই নির্দেশনা দিয়ে বিএনপি প্রধান বলেছিলেন, কথা বলতে হলে সবাইকে একই সুরে একই ধরনের কথাবার্তা বলতে হবে।

বিচ্ছিন্নভাবে কোনো ধরনের বেফাঁস কথাবার্তা বলা যাবে না। কিন্তু অতি সম্প্রতি রংপুরের সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা একেক ধরনের কথাবার্তা বলেছেন। যা দলের ভিতরে ও বাইরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের পাতানো ফাঁদে যেমন পা দেওয়া যাবে না, তেমনি তাদের উসকানিমূলক বক্তব্যেও সাড়া দেওয়া যাবে না। কারণ এ সরকার স্বেচ্ছাচারিতার চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।

দেশে এখন একটা চরম বৈরী অবস্থা চলছে। সুতরাং এ অবস্থায় যতটুকু চুপচাপ থাকা যায় ততই মঙ্গল। তবে ‘দেশনেত্রী’ বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষণা অনুযায়ী— আগামী দিনের আন্দোলন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন দুটোর জন্যই সবাইকে একসঙ্গে প্রস্তুতি নিতে হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে। তবে তার আগে একটা নিরপেক্ষ অবস্থা তৈরি করতে হবে। ‘লেভেল প্লেয়িং’ ফিল্ড তৈরি করতে হবে।

এ জন্য সরকারকে বাধ্য করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে আর কোনো ধরনের পাতানো নির্বাচন হতে দেবে না জনগণ।

এ বিষয়ে বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বেফাঁস কথাবার্তা বলার চেয়ে চুপচাপ থাকাই ভালো। এতে কাজও বেশি করা যায়। বিতর্কও কম হয়। বেশি কথা বললে বরং মানুষ বিরক্ত হয়। সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ