মাওলানা মাহমুদুল হাসান সিরাজী
প্রিন্সিপাল, মাদরাসা উসমান ইবনে আফফান রা.
গতকাল বাদ জুমা যাওয়ার কথা ছিল কামরাঙ্গীরচর। কিন্তু সঙ্গত কারণে যাওয়া হয়নি। পরে ২.৪৫ এ রওনা দিয়ে চলে গেলাম কুমিল্লা দেবিদ্বারে গ্রামের বাড়িতে।
মাগরিব নামাজ আমাদের মসজিদে গিয়ে পড়ালাম। নামাজের পর বাড়ির মুরুব্বীদের সাথে একটু কথা হল। বড়কাকা অসুস্থ। তাই মুক্তিযোদ্ধা কাকাসহ দেখতে গেলাম। এরপর কোম্পানীগঞ্জ চলে আসলাম দুই বন্ধুর সাথে জরুরি আলোচনা থাকায়।
সেখান থেকে আবার চলে গেলাম বাইড়া আমার উস্তাদের সাথে দেখা করে বিশেষ একটা কাজের দোয়া আনতে। আর বিশেষ কাজটাও অফলাইনের আন্তরিক ও প্রিয় বন্ধু বান্ধবরা শুধু জানেনই না বরং আমার সহযোদ্ধা হিসাবে পাশে রয়েছেন।
রাত সোয়া নয়টায় উস্তাদের কাছ থেকে খাবার দাবার খেয়ে বিদায় নিলাম। বাইড়া+কোম্পানিগঞ্জ+দেবিদ্বার হয়ে চান্দিনায় এসে পৌঁছলাম রাত পোনে এগারোটায়।
রাত্রে না এসেও উপায় ছিল না। কারণ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আমার ক্লাস। পারত পক্ষে ক্লাস মিছ করি না।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আরেকজন মাওলানা সাহেবসহ একটা শ্যামলী গাড়িতে উঠলাম।
আমাদের গাড়িটা চলছিল খুব স্পিডে। রাস্তাও তখন ফাঁকা ছিল। কোনো সিট খালি না থাকায় আমাদের বসতে হল ড্রাইভারের সাথে ইঞ্জিন কভারে।
আমি তখন গাড়ির স্পিডের দিকে নজর দিলাম। দেখলাম গাড়ি ৮৫ গতিতে চলছে। ভাবলাম, যাক এভাবে চল্লে বেশি সময় লাগবে না।
চান্দিনা ছাড়িয়ে তিন চার কিলোমিটার আসলাম। একটা ট্রাক হঠাৎ করে বাম দিক থেকে ডান দিকে চলে আসল। হঠাৎ আমাদের ড্রাইভারও আর গতি কন্ট্রোল করতে পারেন নি।
ব্যাস একেবারে ট্রাকের পেছনে গিয়ে গাড়িটা ফুলস্পিডে ধাক্কা খেল। আর আমাদের গাড়ির সামনের অংশ একেবারে দুমড়ে মুছড়ে গেল। সামনের গ্লাসটা ভেঙ্গে এর টুকরায় অনেক মানুষই আহত হলেন।
আমারও বাম পায়ে একটু কেটে গেছে। তবে পরিমানে বেশি মনে হল না। কিন্তু বুকে মনে হয় বড় ধরনের ব্যথা পেয়েছি।
গাড়ি থেকে লোকজন ধরাধরি করে আমাদের নামালেন। নেমে রাস্তাই রব্বে কারিমের দরবারে একটা সিজদায় লুটিয়ে পড়লাম।
বাসের একেবারে সামনে থেকেও রব্বে কারিম জীবিত রাখলেন এবং অক্ষত রাখলেন।
স্থানীয় মানুষজন যখন আমাদের উদ্ধার করছিলেন তখন বার বার চিৎকার করে বলছিলেন লাশ কয়টা আছে দেখ?
আলহামদুলিল্লাহ অনেকে আহত হলেও কেউ মারা যাননি। তবে এ এক্সিডেন্টের জন্য ট্রাক ড্রাইভারই দায়ী।
তাবলিগের মেহনতে নায়িকা ময়ূরী থেকে খাদিজা ইসলাম