আবদুল্লাহ আল ফারুক
লেখক, অনুবাদক
ভালোবাসা ও স্নেহের এরচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন কি আর হতে পারে! একজন নব্বই বছর বয়সী উসতায কিন্টারগার্ডেনের ক্ষুদে শিশুর জন্যে পানির চাপকল চেপে দিচ্ছেন। আল্লাহু আকবার।
তাও যেমন তেমন উসতায নন, শায়খুল হাদিস। বছরের পর বছর ধরে বুখারি শরিফ পড়াচ্ছেন, আর তিনিই কি-না একটি ছোট্ট শিশুকে পানি পানের জন্যে চাপকলের শক্ত হাতল শক্তি ব্যয় করে চেপে দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত মনে পড়ে গেল, কদিন আগে আমরা মাকতাবাতুল আযহারের ত্রাণ নিয়ে উখিয়া যাওয়ার পথে কিছুক্ষণের জন্যে যাত্রা বিরতি করেছিলাম ফেনীর জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসায়। আমাদের বহনকারী গাড়িটি থেমে যায় মাদরাসার অফিসকক্ষের সামনে।
মুহতামিম মাওলানা সাইফুদ্দিন সাহেব আমাদের উঞ্চ অভ্যর্থনা জানিয়ে বরণ করেন। হাত ধরে ধরে অফিসকক্ষের ভেতরে নিয়ে যান। আমরা অফিসের ভেতর বসে আছি।
হঠাৎ ভাই Obyed Ullah আমাকে ইঙ্গিত করে বললেন, বারান্দার দিকে তাকান।
আমি দরজার ফাঁক দিয়ে বারান্দার দিকে তাকাতেই বিস্ময়ে থ হয়ে গেলাম। মুহতামিম সাহেব নিজ হাতে আমাদের জুতোগুলো সোজা করে দিচ্ছেন। একজন নয়, দুজন নয়, অন্তত এগারো জনের জুতো তিনি নিজ হাতে সোজা করে বাইরমুখী করে দিচ্ছেন।
অথচ তাঁর বয়স আমাদের সবার দ্বিগুণ। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়স ওবায়দ ভাইয়ের। সম্ভবত চল্লিশ বছর। অথচ মুহতামিম সাহেবের বয়স কম করে হলেও ষাটের উপরে হবে। উপরন্তু ইলম, আমল ও কর্মে তিনি আমাদের অনেক অনেক বড়।
অথচ কী ইখলাস, কী নিরহংকারী জীবন। এমন ফেরেশতাসিফাত মানুষগুলোর কারণেই পৃথিবীটা এখনো টিকে আছে, বোধ হয়।
এঁরাই আমাদের জীবন্ত আকাবির। এঁরাই আমাদের মহান আদর্শ। সত্যি করে বলছি, এটাই কওমি মাদরাসার প্রাণজ বৈশিষ্ট্য। এই কওমি মাদরাসার আমি একজন ক্ষুদ্র ছাত্র, এ কথা ভাবলে নিজেকে গর্বিত মনে হয়।
মহান আল্লাহ আমাদের ওপর তাঁদের বটছায়া দীর্ঘায়িত করুন। আমিন।
[উল্লেখ্য, টিউবয়েল চেপে শিশু ছাত্রদের পানি পান করানো উস্তাদ নববীর জীবন্ত প্রতীক, শায়খুল হাদীস হাফেজ মাসউদ আহমদ শায়খে বাগা হাফিযাহুল্লাহ। আল্লাহ তাঁর এই প্রিয় বান্দার ছায়া আমাদের জন্য যেনো দীর্ঘায়িত করেন।]
বিশ্বের সবচেয়ে কম অপরাধের খেতাব পেল এই আরব দেশটি