তাওহীদ মাদানী
দেওবন্দ থেকে
আসাম রাজ্যে মুসলমানদের নিয়ে চলমান ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করায় মাওলানা আরশাদ মাদানীর নামে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সম্প্রতি দায়ের করা মামলা প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের শামেলীর স্থানীয় আলেমগণ৷
সংবাদ সম্মেলনে শামেলীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম এর মুহতামিম মাওলানা সাইয়েদ বদরুল হুদা কাসেমী বলেন, আসাম রাজ্যে মুসলমানদের নিয়ে চলমান ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মাওলানা আরশাদ মাদানীর বক্তব্য ‘আসামকে দ্বিতীয় মিয়ানমার বানানোর পায়তারা চলছে’ এবং সেখানকার লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে নাগরিকত্বহীন সাব্যস্ত করে তাদের দেশ থেকে তাড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে- এ বক্তব্যের সঙ্গে হাজারো লোক একমত৷
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে যেরূপ নিরাপরাধ মুসলমানদের ঘর ছাড়া করা হচ্ছে, আসামে যেনো ঠিক সেই পায়তারাই চলছে৷ ফলে মাওলানা আরশাদ মাদানী আসামকে মায়ানমারের সাথে তুলনা করে আনুপাতিক একটি বিবৃতি দিয়েছেন৷ যা অবস্থার পর্যবেক্ষণে শতভাগ সঠিক৷ কেননা প্রাথমিক পর্যায়ে রোহিঙ্গাদের সাথে এমন আচরণই করা হয়েছিল যেমনটা আজ আসামে করা হচ্ছে৷
তিনি আরো বলেন, যখন এলাকার পঞ্চায়েত তাদেরকে তাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ড বানানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করেই তাদের নামে কার্ড তৈরি করেছে তাহলে আজ এত বছর পরে এসে কেনো তাদের বিদেশী হিসেবে সাব্যস্ত করা হচ্ছে৷ কেন এত বছর পরে তাদের বহিরাগত বলে স্লোগান দেয়া হচ্ছে৷
তিনি আরো বলেন, দেশের মধ্যে মুসলমানদের নিয়ে একের পর ষড়যন্ত্র চলছেই৷ কেউ কেউ মুসলমানদের হারমজাদা বলে বকে যাচ্ছে৷ কেউ কেউ মুসলমানদের মাঝে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে দাঙ্গা লাগিয়ে ফাসাদ সৃষ্টি করছে৷ কেউ কেউ মুসলমানদের পাকিস্তান চলে যেতে বলছে৷ যে কেউ মুসলমানদের হেনস্থা করেই যাচ্ছে৷
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা সাইয়্যেদ মাহমুদ কাসেমী বলেন, দেশের মাঝে এসব হচ্ছেটা কী? কী সব নাটক নাটক খেলা চলছে এই হিন্দুস্তানে? একদিকে নিরাপরাধ মুসলমানদের নিয়ে চলছে ষড়যন্ত্র৷ অপরদিকে এর প্রতিবাদকারীদের নামে দায়ের করা হচ্ছে একের পর এক মামলা৷
দেশে যদি সত্য কথা কেউ মুখ ফুটিয়ে বলতেই না পারে, যদি এই সত্য বলায় জীবনের ওপর কোনো না কোনো হুমকি আসতেই থাকে তাহলে দেশ চলবে কী করে? দেশের মাঝে শান্তি বজায় থাকবে কী করে?
তিনি আরো বলেন, মাওলানা আরশাদ মাদানী তো কেবল সত্যটাই বলতে চেয়েছেন৷ নিরাশ্রয়ীদের সহযোগিতায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ গরিব অসহায়দের আস্থার জায়গা হয়েছেন৷ এ ছাড়া আর তো কিছু করেননি! এটাই তাহলে তার অপরাধ?
উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা সচিব মাওলান ফিরোজ হায়দার কাসেমী বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে মাওলানা আরশাদ মাদানী কে? কী তার পরিচয়? তিনি তো এমন এক পরিবারের সন্তান যেই পরিবারের হাত ধরে স্বাধীনতা এসেছে এই ভারতবর্ষে৷
আজ এমন এক পরিবারের লোক হয়েও তিনি অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে পারছেন না! অসহায়দের পক্ষে বলায় তাকে দেয়া হচ্ছে হুমকি৷ করা হচ্ছ অপমান৷ এসব তো দেশের স্বাধীনতার সাথে গাদ্দারীর নামান্তর বৈ কিছু নয়৷
তিনি আরো বলেন, আফসোস! শত আফসোস৷ আজ সত্যের আওয়াজকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য নতুন নতুন পথ অবলম্বন করা হচ্ছে৷ সত্য কথা মুখ ফুটিয়ে বলায় দেয়া হচ্ছে জীবনের হুমকি৷ এসব তো দেশের মাঝে অরাজকতার তৈরির আলামত৷ এই অরাজকতা যদি এখনই থামিয়ে দেয়া না হয় তাহলে আমি মনে করি দেশের অদূর ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার৷
দিল্লির জমিয়ত দফতরে পুলিশি হানা, আরশাদ মাদানিকে জেরা