সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


নবী সা. তো এক শরীয়ত নিয়ে এসেছেন, তাহলে মাযহাব ৪টি কেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ যুবায়ের

ইমাম সুয়ূতী রহ. বলেন, জেনে রাখো! এই উম্মতের মাঝে মাযহাবের ভিন্নতা বিরাট নেয়ামত, বিশাল অনুগ্রহ। এই বিভিন্নতার মাঝে রয়েছে সূক্ষ্ম রহস্য, যা জ্ঞানীরা অনুধাবন করতে পারেন, আর মূর্খরা তা থেকে থাকে অন্ধ।

এমনকি, কতক মূর্খকে আমি বলতে শুনেছি, ‘নবী সা. তো এক শরীয়ত নিয়ে আগমন করেছেন, তাহলে চার মাযহাব এলো কোত্থেকে!?'...

কথাগুলো আছে ইমাম সুয়ূতির ‘জাযিলুল মাওয়াহিব ফি ইখতিলাফিল মাযাহিব’ কিতাবে। শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামাহ তার ‘আদাবুল ইখতিলাফ’ কিতাবে কথাগুলো নকল করেছেন। লম্বা আলোচনা। পুরোটা দিতে পারলে ভাল হতো। যাহোক, এখন শায়খ মুহাম্মদ আওয়ার একটি ঘটনা উল্লেখ করা যাক।

শায়খ আওয়ামা লিখেন...

এক শিক্ষার্থী আমাকে বললো, ‘সব মাযহাব ভেঙে এক মাযহাব গড়ার ব্যাপারে চেষ্টা করা যেতে পারে কি? এ বিষয়ে আপনি কী বলেন?

আমি সংক্ষেপে তাকে বললাম, ‘এই যে চেষ্টার কথা তুমি বলছো, এটা শরিয়ত প্রণয়নের ক্ষেত্রে যেমন আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছার বিরোধী, তেমনি বিরোধী রাসুল সা., সাহাবা রা. ও তাদের পরবর্তী সালাফে সালেহিনের চিন্তার সাথে। আর এটা বিবেক-বুদ্ধিও বিরোধী।

তারপর বিষয়টি খুলে বললাম, ‘আচ্ছা, আল্লাহ তায়ালা কি অনাদিকাল থেকে জানতেন না যে, আরবরা ‘কুরু’ শব্দটি ‘হায়েয’ এবং ‘তুহুর’ উভয় অর্থে ব্যবহার করে?’

সে বললো, 'অবশ্যই!'

'আল্লাহ কি অনাদিকাল থেকে জানতেন না, অচিরেই যায়েদ ইবনে ছাবেত নামে একজন সাহাবি হবে, আরেকজন হবে আবদুল্লাহ বিন মাসউদ নামে, আর যায়েদ বলবে, ‘কুরু’ হলো 'তুহুর' আর বিন মাসউদ তার বিরোধী মত পোষণ করে বলবে, 'কুরু' মানে 'হায়েয'?'

'অবশ্যই...'

'আচ্ছা, তাহলে কেন আল্লাহ 'ছালাছাতা কুরু' অংশটি এমনভাবে নাযিল করলেন না, যেন বিন মাসউদ এবং বিন ছাবেত-এর মাঝে মতবিরোধের সম্ভাবনা না থাকে? তিঁনি তো বলতে পারতেন, 'তিন হায়েয' কিংবা 'তিন তুহুর' (ইদ্দত পালন করতে হবে)। তাহলেই তো মতবিরোধের মূল উৎপাটন হয়ে যেতো এবং কারো কিছু বলারও সুযোগ থাকতো না।'

তারপর শায়খ বনি কুরাইযায় গিয়ে আসরের নামাজ সংক্রান্ত ঘটনা উল্লেখ করে হাদীস থেকে মতবিরোধের উৎস বর্ণনা করেন এবং শেষে দিকে মানসিকতার পার্থক্যের কারণেই মতবিরোধ হবার বিষয়টি ধরিয়ে দিয়ে বলেন, 'একক মাযহাব সৃষ্টির চেষ্টা করা এবং সবাইকে এক মাযহাবের আওতায় আনা- এক প্রকারের পাগলামি, বিভ্রান্তি!!

শায়খের কথার সত্যতা আমরা দেখতে পাই, যখন দেখি সালাফী আলেমদের মাঝের মতবিরোধ নিয়ে আরবি ও বাংলায় স্বতন্ত্র কিতাব রচিত হয়।

যারা মতবিরোধ দূর করে এক মাযহাবের কথা বলেন, তাদের মাঝের মতবিরোধ যখন 'সমগ্র' হিসেবে প্রকাশ পায়, তখন চার মাযহাবের মতবিরোধ দূরীকরণের চিন্তা যে পাগলামি, এটা আর অস্পষ্ট থাকার কথা না।

আবু হানিফা রহ. ও তার অবদান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ