এ এস এম মাহমুদ হাসান
মিয়ানমারের হিংস্র সামরিক জান্তা ও বৌদ্ধ মগ গোষ্ঠির নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মুসলিম রোহিঙ্গারা। জীবন্ত অবস্থায় ধারালো চাপাতি দিয়ে বিকলাঙ্গ করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে হত দরিদ্র এসব মুসলিম শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ বনিতাকে। মগদস্যুরা মুসলিম রোহিঙ্গাদের বক্ষ চিরে কলিজা ছিড়ে বিভৎসতা ছড়িয়েছে পুরো আরাকান জুড়ে।
পৈশাচিক কায়দায় হত্যা, খুন, ও ধর্ষনের মুখোমুখি লক্ষ লক্ষ নিরিহ রহিঙ্গারা বিতাড়িত হয়ে বাঁচার তাগিদে ছুটে আসছে বাংলাদেশ সীমানায়।
এ মুহূর্তে আতঙ্কগ্রস্থ রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ব মোড়ল গোষ্ঠি এগিয়ে না আসলেও আমাদের জাতী ভাই, প্রতিবেশী ও মানবিক স্বার্থে অনেক কিছুই করণীয় আছে।
এ দেশের ওলামায়ে কেরাম ও ইমামদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক রাখেন অনেক ধনাঢ্য ও শিক্ষিত সমাজ। সঙ্গত কারণে ওঠা বসা করেন অনেক এলিট শ্রেণীদের সাথে। দ্বীনি ওয়াজে, জুমাবারে মসজিদে বয়ান করে মুগ্ধ করে দেন ইসলাম প্রিয় আধুনিক পরিবারের সন্তানকেও।
যেহেতু এ দেশের ওলামায়ে কেরাম বিশেষত প্রতিটি মসজিদের সন্মানিত ইমামগণ সমাজ ও জাতীর পথ প্রদর্শক। জাতীর বিবেককে পরিচালিত করার রোল মডেল। সেহেতু জাতীর সেবক, পথ নির্দেশক ও সমাজের চালিকাশক্তি এ দেশের সকল ইমামদের নিকট রোহিঙ্গা মুসলিম ভাইদের সাহায্যার্থে এ মুহূর্তের সবচেয়ে জরুরি ৩টি বিষয়ে আবেদন করছি।
আবেদন- ১। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জনমত গড়তে আপনি ইমাম হিসেবে আপনার অনুসারী ও হিতাকাঙ্ক্ষিদের সাথে যোযোগ রাখুন। বয়ানে হিংস্র বৌদ্ধ গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন করুন। কুরআন হাদিসের আলোকে মায়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলিম নিধনের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করুন।
আবেদন- ২ ।এ মুহূর্তে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের মাঝে সবচেয়ে করুন পরিস্থিতিতে আছে নিষ্পাপ রোহিঙ্গা শিশুরা। অভূক্ত মায়ের বুকের দুধের শূন্যতা ও শিশুখাদ্যের অভাবে আজ মৃত্যু পথযাত্রী হাজার হাজার শিশু।
সুতরাং এ দিকটি বিবেচনা করে প্রতি শিশু পরিবারের জন্য শিশু খাদ্যের ব্যবস্থা করুন। আপনার পরিচিত ও শুভাকাঙ্খীদের এ ব্যাপারে দান সাদকা করার প্রতি উৎসাহিত করুন। মুসলিম শিশুদের বাঁচিয়ে রাখতে তাদের থেকে অনুদান গ্রহণ করে শরণার্থী শিবিরে জরুরি ভিত্তিতে পৌছে দিন।
আবেদন-৩ প্রায় ১৫ হাজার অন্তসত্বা রোহিঙ্গা নারী বর্তমানে উখিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া উগ্র বৌদ্ধগোষ্ঠীর বিভৎস কায়দায় ধর্ষণের শিকার অনেক অবিবাহিত নারীও গোপনাঙ্গের ইনফেকশনে ভূগছে। কিন্তু এসব নির্যাতিত ও ধর্ষিতা নারীদের সঠিক পরিচর্যা ও সুচিকিৎসার অভাবে রোগাক্রান্ত হওয়া ও অবাঞ্চিত গর্ভধারণ করার মত মারাত্বক ঝুঁকি রয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ক্যাম্পে মহিলা গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের যথেষ্ট কমতি রয়েছে।
তাই এ মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে আপনি ইমাম হিসেবে আপনার সমাজে পরিচিত ধনাঢ্য ও মহিলা ডাক্তার পরিবারে যোগাযোগ করুন। এ সকল প্রসূতী মায়েদের চিকিৎসাসেবা দিতে মাহরাম/আত্মীয় নিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করুন।
এটি একটি মানবিক আবেদন। মানুষ হিসেবে আমাদের এ দায়িত্ব পালন করা আমাদের প্রধান নৈতিক দায়িত্ব। আসুন উপরোল্লিখিত ৩টি আবেদন সমাজে ছড়িয়ে দেই। মানবিক আবেদ রক্ষায় সক্ষমদের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠাবার ব্যবস্থা করি।