শায়খুল হাদিস আল্লামা আবূ মূসা : মুফতি মুতীউর রহমান আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন ভাবতেই খুব কষ্ট লাগছে। আহ! তাঁর নামের পাশে রহমতুল্লাহি আলাইহি বলতে হচ্ছে। তিনি ছিলেন আমাদের মাদরাসার একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র-শিক্ষক-স্টাফ-পরিচালক সবাই তাকে শ্রদ্ধা করতো, ভালোবাসতো।
১৯৯৮ এ তিনি আমাদের মাদরাসায় এসেছিলেন। মাদরাসা ও মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের আগলে রেখেছেন নিজ ঘরের সন্তান আত্মীয়ের মতো। আজীবন চেয়েছেন দীনের খেদমত করতে। বিশেষত ফিকহ ও হাদিসের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে।
তার ভেতর কোনো জাগতিক চাহিদা ছিলো না। তিনি নিরহঙ্কার ও সাদাসিধে একজন মানুষ। তাঁর একমাত্র কামনা ছিল, তিনি যেন ফিকহ ও হাদিসেরর খেদমত করতে করতে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে পারেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর কামানা কবুল করেছেন।
মুফতি মুতীউর রহমান রহ. ছিলেন আমাদের মাদরাসার প্রধান মুফতি ও শায়খে সানি ছিলেন। দীর্ঘদিন বুখারি সানি পড়িয়েছেন। কোনো সন্দেহ নেই তার মৃত্যুতে আমরা একজন বিরল প্রতিভার অধিকারী মুরুব্বি ও ইলম ও মাআরিফে ভরপুর একজন শায়খকে হারালাম।
মুফতি মুতীউর রহমান রহ. অত্যন্ত স্বজ্জন একজন মানুষ ছিলেন। তাঁর কথায় ও আচরণে সবসময় স্নেহ, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ফুটে উঠতো।
তিনি খুবই মেধাবি, সচেতন ও প্রাজ্ঞ আলেম ছিলেন। তাঁর কাজে ও চিন্তায় ছিলো রুচির ছাপ। আমরা তাঁর কাছে অনুপ্রেরণা, আশ্রয় ও যে কোনও বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান পেতাম। তাঁকে হারিয়ে আজ আমরা মুরুব্বিশূন্য। আশ্রয়শূন্য।
তিনি যেমনি বাংলাদেশের একজন শীর্ষ আলেম ছিলেন তেমনি ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের একজন বরেণ্য লেখক। যুগান্তরসহ বিভিন্ন দৈনিকে লিখেছেন নিয়মিত কলাম। সব শ্রেণির পাঠককে দিয়েছেন দীনের পথসন্ধান। যুগিয়েছেন আত্মার খোরাক। এছাড়াও তিনি পাঠকের চাহিদা পূরণে এবং দাওয়াতে দীনের লক্ষ্যে লিখে গেছেন অনেক বইপুস্তক।
মুফতি মুতীউর রহমান ছিলেন অগ্রসর চিন্তা অধিকারী
মুফতি মুতীউর রহমান রহ. রেখে গেছেন অসংখ্য ছাত্র, ভক্ত, পাঠক। রেখে গেছেন চিন্তা ও আদর্শের আমানত। সবার কাছে আমার আহবান, তাঁর এই আমানতকে যেন যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়।
তিনি রেখে গেছেন দুই মেয়ে, মা ও ভাইবোন। আল্লাহ তাআলা তাদের এই বিয়োগে ধৈর্য ধারণ করার তওফিক দান করুণ।
লেখক : মুহতামিম, শেখ জনুরুদ্দীন (র.) দারুল কোরআন শামসুল উলুম চৌধুরীপাড়া মাদরাসা
অনুলেখক : সোলায়মান সাদি