ভারতের সুপ্রিমকোর্টের দেয়া তিন তালাক নিষিদ্ধের রায়কে অসাংবিধানিক বললেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নেতা মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ।
তিনি বলেন, মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকারে আদালত অন্যায্যভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। শিগগির সুপ্রিম কোর্টেই পাল্টা আবেদনের কথাও জানান তিনি। পাশাপাশি কলকাতায় কনভেনশন এবং সমাবেশ করে ওই রায়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সংগঠনের রাজ্য কমিটি।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে বুধবার বৈঠক করে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ রাজ্য ওয়ার্কিং কমিটি। বৈঠকের পর সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী দাবি করেন, ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ সরকার মুসলিম পার্সোনাল ল’কে আইনের স্বীকৃতি দিয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতার পরে বি আর অম্বেডকরের নেতৃত্বে সংবিধানের মুসাবিদা কমিটি সদস্য হয়েছিলেন জমিয়তের তৎকালীন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিফজুর রহমান। ওই কমিটি বিস্তর আলাপ আলোচনার পর মুসলিম ল’কে ভারতের নতুন সংবিধানে অধিকার হিসেবে মর্যাদা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
মাওলানা সিদ্দিকুল্লা বলেন, সেই অধিকার এখনও বহাল আছে। সুপ্রিম কোর্ট বা প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি কেউ চাইলে ওই অধিকার কেড়ে নিতে পারেন না। সেটা করলে সংবিধানকেই নস্যাৎ করা হয়।
সিদ্দিকুল্লা আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ই অসাংবিধানিক। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ মাত্র এক ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় যে রায় দিয়েছে তা সংবিধানবিরোধী। ওই বেঞ্চের সদস্য বিচারপতিদের তালাক বিষয়ে বিভিন্ন মত ছিল। তা থেকেও বোঝা যায়, বিষয়টি এতো সহজ নয়।
সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করছে জমিয়তের কেন্দ্রীয় কোর কমিটি।
কলকাতার মহাজাতি সদনেই আগামী ২৮ অগস্ট কনভেনশন ডাকা হয়েছে এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করার জন্য। শহরে বড় সমাবেশও করতে যাচ্ছেন তারা।
তবে মাওলানা সিদ্দিকুল্লা বলেছেন, তিন তালাক প্রথার অপব্যবহার অবশ্যই হয়েছে। সেই ব্যর্থতার দায় তাদেরও। কিন্তু তাই বলে গোটা মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অধিকারের উপর আদালত কোনও নির্দেশ চাপিয়ে দিতে পারে না বলে জমিয়তের দাবি।