সাজিদ নূর সুমন : অ্যান্টেবায়োটিক না খেয়ে শুধু প্রাকৃতিক খাদ্যের মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান? তাহলে এই ১০টি খাবার আজই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন। কোনো রোগ-বালাই আর আপনার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
তুলসী : প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে তুলসীকে একটি “প্রাণের স্পর্শমণি” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এটি আয়ুবর্ধক হিসেবেও বেশ পরিচিত। এই গাছের রস সাধারণ ঠাণ্ডা-সর্দি, প্রদাহ, ম্যালেরিয়া এবং হৃদরোগ থেকে শুরু করে নানা রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। কারণ এতে রয়েছে শতশত উপকারী উপাদান। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুনাশক, এডাপ্টোজেনিক এবং রোগপ্রতিরোধী উপাদান।
চিয়া বীজ : মায়া ভাষায় চিয়া শব্দের অর্থ “শক্তি”। এটি পুষ্টি উপাদানে ঠাসা। আর এতে রয়েছে প্রচুর শক্তিবর্ধক ক্ষমতা। এটি আঁশ, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পুষ্টি উপাদানেও সমৃদ্ধ।
রাতে এক চামচ চিয়া বীজ এক কাপ পানি ও এক চিমটি গোলাপি লবণ মিশিয়ে খেয়ে নিলে তা আপনাকে সারাদিন ধরে শক্তি যোগাবে। এটি সারাদিন ধরে আপনার মেজাজ-মর্জিও ভালো থাকবে।
আদা : ঠাণ্ডা-সর্দি ও কফের চিকিৎসায় সেই দাদা-দাদীদের আমল থেকেই আমরা আদার ব্যবহার দেখে এসেছি। আদা প্রদাহ কমায়। ফলে স্বরভঙ্গ এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগের চিকিসায়ও এর জুড়ি মেলা ভার। এটি জিনজারোল এর রুপে তাপ ধারণ করে। যা বমি বমি ভাব সংক্রান্ত সব ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য বেশ ভালো কাজ করে। এছাড়া কোলোস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সহায়ক আদা।
রসুন : আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন বিশ্বব্যাপী রান্নায় কেন রসুনের ব্যবহার করা হয়? আপনি যদি ভেবে থাকেন শুধু স্বাদ বাড়ানোর জন্যই রসুনের ব্যবহার করা হয় তাহলে আপনি আংশিকভাবে সঠিক। রসুন রক্ত চাপ কমায় এবং রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে সচল রাখতে সহায়ক। রসুনে থাকা অ্যালিসিন রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।
দই : যখনই আমরা পাকস্থলীর কোনো সমস্যায় আক্রান্ত হই আমাদের দই খেতে বলা হয়। কারণ এতে রয়েছে উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পাকস্থলীতে পরিষ্কার করে। দই খাওয়ার সময় তা হালকা পানি দিয়ে পাতলা করে নিবেন। দই ভিটামিন ডি-র ভালো উৎস।
সূর্যমুখী বীজ : এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ই। এছাড়া ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন বি-৬ এর মতো খনিজ পুষ্টিতেও ঠাসা এটি। প্রতিদিন একপি কাপের এক চতুর্থাংশ সূর্যমুখী বীজ খেলে ভিটামিন ই-র চাহিদা মিটবে। যা দেহকে দিনভর সক্রিয় ও শক্তিবান রাখবে।
পেঁপে : গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি মাঝারি আকারের পেঁপে খেলে দেহের ভিটামিন সি-র ঘাটতি পূরণ হয়। এতে রয়েছে ‘প্যাপিন’ নামের হজমে সহায়ক একটি এনজাইমও আছে যা হজম শক্তি বাড়ায় এবং দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম ও ফোলেট সরবরাহ করে।
কিউই : নিয়মিতভাবে কিউই খেলে রক্তে শ্বেতকণিকা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ফোলেট এবং পটাশিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান দেহের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এটি অবসাদ কাটাতেও বেশ কার্যকর।
ব্রোকোলি : আধা-রান্না/সেদ্ধ ব্রোকোলি খেলে এতে থাকা খনিজ পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং ই। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং আঁশ হজমে সহায়তা করে ও হাড়ের শক্ত করে।
কাজুবাদাম : কাজুবাদাম কফ ও ঠাণ্ডা-সর্দির চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মাত্র কয়েকটি কাজুবাদাম খেলেই দেহের ভিটামিন ই-র চাহিদা ১০০ ভাগ পুরণ হয়। যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া
-এজেড