হিন্দু থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন মেয়ে। পরিবার থেকে বনিবনা হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত বিষয়টর ফয়সালা হলো আদালতে। ওই নারীকে ইসলাম ধর্ম পালনের সুযোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ইসলাম গ্রহণের পর ওই তরুণী নিজের নাম রেখেছেন আথিরা আখা আয়েশা। তাকে ইসলামিক রেলিজিয়াস স্ট্যাডি বিষয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার অব্যাহত সুযোগ দেয়া হবে- তার বাবা-মা এই শর্ত প্রদানের পর আথিরা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে চলে যান।
গত ২৭ জুলাই কেরালার কানুর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের পর তাকে হসদুর্গ আদালতের মাধ্যমে ওইমেন্স হোমে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে আথিরাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়ার জন্য হাইকোর্টের দারস্থ হন তার বাবা-মা।
আদালতে আথিরা তার জবানবন্দিতে বলেন, তিনি তার নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছেন এবং তিনি তার ইসলামিক রেলিজিয়াস স্ট্যাডি বিষয়ে পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে চান।
তার বাবা-মা আদালতকে জানায় যে, তারা তাকে তার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুয়ায়ী জীবন-যাপনের অনুমতি দেবে।
অন্যদিকে, আদালতকে পুলিশ জানিয়েছে যে, মেয়েটি আইএসের মতাদর্শে প্রভাবিত হতে পারে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
গত ১০ জুলাই আথিরা তার কাসারাগদ জেলার উদুমার বাড়ি ত্যাগ করেন। বাড়ি ত্যাগ করার আগে তিনি ১৫ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে যান। এতে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন।
বাড়ি ছাড়ার পর তিনি তার মামার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাকে জানান যে, তিনি তার বাড়িতে শান্তি খুঁজে পেতে সমর্থ হন নি।
কানুর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের পর বৃহস্পতিবার তিনি এশিয়ানেট নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, কানুরে তিনি তার এক বান্ধবীর সঙ্গে ছিলেন এবং তার বাবা-মা তাকে ইসলামি জীবন-যাপনের অনুমতি দিলে তিনি তাদের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন।
তিনি জানান, তিনি সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছেতেই ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছেন এবং কেউ তাকে এ জন্য বাধ্য করেনি।
আথিরা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অনেক কাল্পনিক অভিযোগ ছড়ানো হয়েছিল যে, আমি ইসলামিক স্টেটে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাড়ি ছাড়ার সময় আমি আমার পাসপোর্টও সঙ্গে নেইনি। আইএসের সঙ্গে আমাকে জড়ানোর কারণে আমি কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলাম, কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে তাদের সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সংযোগ নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার বাবা-মাকে ভালোবাসি। তারা যদি আমাকে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক হন, তবে তাদের সঙ্গে থাকতে আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমি ইসলাম ধর্ম বিষয়ে আমার অধ্যয়ন চালিয়ে যেতে চাই।’
তিনি এশিয়ানেটকে জানান, তিনি গত কয়েক বছর ধরে ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করছেন এবং শুরুর দিকে তার বাবা-মা তাকে কোনো ধরনের বাধা দেননি।