শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


যারা দলের শেকড় কাটার চেষ্টা করছে তারা ছিটকে পড়বে: অ্যাডভোকেট শাহীনূর পাশা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দেশের প্রাচীনতম ইসলামিক রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশে সম্প্রতি অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে দলের অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। দলের এমন সংকটক তৈরি কারণ ও তা সমাধানের উপায় নিয়ে আওয়ার ইসলামের সাথে কথা বলেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহীনূর পাশা। আওয়ার ইসলামের পক্ষে কথা বলেছেন আতাউর রহমান খসরু

আওয়ার ইসলাম : গণমাধ্যমে জমিয়তে অস্থিরতার সংবাদ আসছে তা কতোটা বাস্তব? সৃষ্ট অস্থিরতা দূর করতে আপনারা কী উদ্যোগ নিলেন?

শাহীনূর পাশা : যা শুনেছেন তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি তো আছেই। তবে আমাদের দলীয় ফোরাম বিষয়টা খুব বড় করে দেখছে না।

আওয়ার ইসলাম : কেনো গুরুত্ব দিচ্ছেনা তারা?

শাহীনূর পাশা : আমি বলতে চেয়েছি তারা নোটিশে নিচ্ছেন না। সেটা আমার ধারণা থেকে। আমি মনে করছি, তারা উদ্যোগ নিলে বিষয়টি আমি জানতে পারতাম। তবে আমার অগোচরেও হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।

আওয়ার ইসলাম : গণমাধ্যমে দলের অখণ্ডতা নিয়ে আশঙ্কা করছে। আপনার করছেন কি?

শাহীনূর পাশা : গণমাধ্যমে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আশা করি পরিস্থিতি সে দিকে যাবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

আওয়ার ইসলাম : আপনি মনে করেন দলের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী নির্বাহী সভাপতি মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছেন? গণমাধ্যমে যেমন এসেছে।

বহিরাগতদের পদায়নে অস্থির জমিয়ত : মুফতী ওয়াক্কাস স্বপদে বহাল আছেন বললেন শাহীনূর পাশা

শাহীনূর পাশা : আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এমন বলার সুযোগ নেই। এমন বলা যেতে পারে, হুজুরকে কেউ কেউ হয়তো ভুল তথ্য দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। নতুবা তিনি  এমন লোক নন যে, তিনি আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করবেন।

হ্যা, আমি মনে করি তিনি আরও উদার, সহনশীল ও সংযত হলে মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে নিয়ে সমস্যা হয়েছে তা হতো না।

আওয়ার ইসলাম : দলের এমন অস্থিরতা তৈরি পেছনে কারা দায়ী বলে আপনি মনে করেন?

শাহীনূর পাশা : দলের ভেতরের ও বাহিরের একদল মানুষ জমিয়তে অস্থিরতা তৈরির পেছনে সক্রিয়। কিন্তু তারা তাদের ষড়যন্ত্রে সফল হবে না। বরং যারা দলের ভেতরে দলের স্বার্থ বিরোধী কাজ করছেন তারা দল থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

মুফতী ওয়াক্কাস দলে উড়ে এসে জুড়ে বসেন নি। সারা দেশের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তার একটি শক্ত ভিত আছে। আমি মনে করি না দলের কেউ তাকে মাইনাস করার চেষ্টা করছে। কিছু অতি উৎসাহী লোক -যাদেরকে অপরিণামদর্শীই বলা যায়- তাদের কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারাও হয়তো ভাবে নি বিষয়টি এ পর্যন্ত গড়াবে।

আওয়ার ইসলাম : বহিরাগতদের কারণে এ সমস্যার তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। আপনি কি বলেন?

শাহীনূর পাশা : অনেকেই এমন অভিযোগ করেন। তবে আমি মনে করি না তাদের জন্যই দলের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

আওয়ার ইসলাম : মুফতী ওয়াক্কাস বিএনপি জোট ছেড়ে বা জমিয়তের এক অংশ নিয়ে ইসলামি দলগুলোর একটি জোটে যোগ দিবেন এমন সম্ভাবনা কতোটুকু?

শাহীনূর পাশা : আমি এ সম্ভাবনাকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছি। কারণ, মুফতী ওয়াক্কাসের নির্বাচনী এলাকার বিএনপি নেতা-কর্মীর তার প্রার্থিতার ব্যাপারে কোনো আপত্তি নেই। তারা মনে করছে, মুফতী ওয়াক্কাস সেখান থেকে নির্বাচন করবেন এবং তিনি নির্বাচিত হয়ে আসবেন।

তাহলে তিনি কেনো ২০ দলীয় জোট ছেড়ে এমন একটি দলের সাথে ঐক্য করতে যাবেন যাদের কোনো গণভিত্তি নেই। যাদের দলীয় কাঠামো খুবই দুর্বল।

আওয়ার ইসলাম : জমিয়ত ভাঙ্গলে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

শাহীনূর পাশা : জমিয়ত ভাঙ্গবে এটা আমি বিশ্বাসই করি না। জমিয়ত ভাঙ্গলে আমরা যারা আমাদের জীবন যৌবন জমিয়তের জন্য উৎসর্গ করেছি তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

শুধু জমিয়তই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না; বরং বাংলাদেশের সামগ্রিক ইসলামিক রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আওয়ার ইসলাম : আপনি ব্যক্তিগত উদ্যোগের কথা বলেছিলেন। কবে থেকে তা শুরু হবে?

শাহীনূর পাশা : আমি আগামী রবিবার থেকে আমার মিশন শুরু করবো। কেন্দ্রীয় সভাপতির সাথে দেখার করার মাধ্যমেই আমার মিশন শুরু হবে। মহাসচিবের সঙ্গেও আমি দেখা করবো। যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গেও বসবো।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ