ইমদাদ ফয়েজী: সিলেটে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও বাজার। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন সিলেটের ছয় উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। কোন কোন স্থানে বন্যার্তদের জন্য নামমাত্র ত্রাণ পৌঁছালেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যাকবলিত বেশিরভাগ এলাকায়ই এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উজানে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ে টানা বর্ষণে সিলেটের কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর পানি বাড়তে থাকে। বর্তমানে দু'টি নদীর সবকটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে কুশিয়ারা নদীর পানি ঢুকে জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। উজানে টানা বর্ষণ হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে এগোচ্ছে।
সরেজমিনে ফেঞ্চুগঞ্জ গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদরের বেশিরভাগ জায়গা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের অধিকাংশ দোকানপাটে ওঠেছে পানি। ব্যবসায়ীরা মাচা বেঁধে দোকানের ভেতর মালপত্র রেখেছেন। বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কায় অনেকে মালপত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
বাজারের ব্যবসায়ী লিটন মিয়া জানান, প্রায় ২০ দিন ধরে তার দোকানে পানি জমে আছে। এছাড়া বাজারের বেশিরভাগ দোকানপাট ও রাস্তা পানিতে ডুবে যাওয়ায় ক্রেতারাও বাজারে আসতে পারছেন না। এতে তারা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদর সংলগ্ন পিটাইটিকর গ্রামের শফিকুর রহমান জানান, তিন সপ্তাহ ধরে গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় থাকলেও সরকারি ত্রাণ পৌঁছায়নি। এমনকি সরকারি কোন কর্মকর্তাও এই বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেননি।
ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মুরাদ জানান, তার ইউনিয়নের বন্যার্তদের জন্য দুইটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রের বন্যার্তদের মাঝে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলা বন্যা কবলিত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বন্যার্তদের জন্য ১২৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ প্রায় তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আজ রবিবার জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও দুর্যোগ কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য যে পরিমাণ ত্রাণ প্রয়োজন সে পরিমাণ ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হবে।