শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


পাঁচ স্তরে প্রস্তুত হচ্ছে হাইয়াতুল উলয়ার ফলাফল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গত ১১ এপ্রিল গণভবনে কওমি শিক্ষা সনদের মান ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এর পরপরই কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরা হাদিস তাকমিলকে মাস্টার্সের মান দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনের আলোকে কওমি ধারার ৬ শিক্ষা বোর্ড নিয়ে গঠিত হয় ‘আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ’ নামক একটি সম্মিলিত বোর্ড। বোর্ডের অধীন প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় কওমি মাদরাসার সর্ববৃহৎ পাবলিক পরীক্ষা।

এ পরীক্ষায় দেশের ৬টি কওমি শিক্ষাবোর্ডের ৭৩৭টি মাদরাসার ১৯ হাজার ৪৭২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।  ১৫ মে সারা দেশে একযোগে শুরু হয়ে ২৫ এ্প্রিল তা শেষ হয় কওমি শিক্ষা ধারার সর্ববৃহৎ এ পাবলিক পরীক্ষা।

এখন চলছে ফলপ্রকাশের প্রস্তুতি। হাইয়াতুল উলয়ার ফলাফলের সর্বশেষ অবস্থা জানতে হাইয়ার অফিসে যান আওয়ার ইসলামের বার্তা সম্পাদক আতাউর রহমান খসরু। তার সঙ্গে কথা পরীক্ষার ফলাফলের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে কথা হাইয়াতুল উলয়ার ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা ইসমাইল বরিশালী

ফলাফলের কাজ কোনো পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  কাজ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। আমরা মাত্র ৩ দিন আগে কাজ শুরু করেছি। ৩ শাওয়াল থেকে আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়েছে। কাজের আগ্রগতি বললে, ২০ ভাগের ১ ভাগ বলা যায়।

খাতা দেখাসহ মোট পাঁচ স্তরে প্রস্তুত হচ্ছে চূড়ান্ত ফলাফল। রমজানের শেষ ভাগ থেকে খাতা জমা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জমা হয়েছে সব খাতা। এবার হাইয়াতুল উলয়ার খাতা মোট ৪৬০ জন পরীক্ষক দেখেছেন। জানান হাইয়াতুল উলয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

এখন চার স্তরে হবে নিরীক্ষণ। মাওলানা ইসমাইল বলেন, ‘খাতা জমা হওয়ার পর। আমাদের কাজ হয় নিরীক্ষণ করা। নিরীক্ষণের উদ্দেশ্য ‘তাওয়াজুন’ অর্থাৎ পরীক্ষক তার সব খাতা সমানভাবে দেখেছেন কিনা এবং ঠিকভাবে দেখেছেন কিনা এগুলো যাচাই করা।’

ফজিলতে পাশ না করলে এবার থেকে দাওরা পরীক্ষা দেয়া যাবে না

কওমি মাদরাসার নতুন শিক্ষাবর্ষ: কোথায় কখন ভর্তি

তিনি আরও জানান, ‘এরপর থেকেই মূলত রেজাল্ট পর্ব শুরু হয়। আমরা চারটি স্তরে পরীক্ষার খাতা নিরীক্ষণ করি। নিরীক্ষণ করছেন ২০ নিরীক্ষক।’

খাতা নিরীক্ষণের স্তরগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন অভিজ্ঞ এ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। তিনি বলেন, ‘প্রথম স্তরে সবগুলো খাতা সাধারণভাবে নিরীক্ষণ করা হয়। শিটে নম্বর উঠে যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্তরের নিরীক্ষণ শুরু হয়। সেখানে দেখা হয় কোনো ছেলের নম্বরে অসামাঞ্জস্য আছে কিনা। যেমন সে সব বিষয়ে গড়ে ৭০ পেলো একটি বিষয়ে ৯৪ পেলো ৩৪ পেলো এ বিষয়ের খাতা আমরা আবার দেখবো। স্বাভাবিকত্ব ঠিক আছে কিনা। আমরা খাতাগুলো আবার নতুন করে দেখবো। প্রয়োজন হলে, আমরা নিরীক্ষক বাড়াবো। এটা বেশ লম্বা কাজ। ঠিক কতো জন লাগবে বুঝতে পারছি না। কারণ বেফাকের বাইরেও নতুন পরীক্ষক এখানে নিয়োগ হয়েছেন। যাদের ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই।’

‘তৃতীয় স্তরে মেধা তালিকার একটি খসড়া করা হবে। নম্বরের একটি গড় ধরে আমরা পুরো তালিকা থেকে নামের একটি খসড়া করবো। এ তালিকা সাধারণত দীর্ঘ হয়। দুইশো জনও হতে পারে। আমরা এ দুশো জনের খাতা আবার যাচাই করবো।’ যোগ করেন তিনি।

তবে চূড়ান্ত মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া যে বেশ দুরূহ তা হাইয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কথা থেকে সহজে অনুমান করা যায়। তার ভাষায় ‘এরপর চতুর্থ ও চূড়ান্ত স্তর। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বোর্ডে নিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। সাধারণত নম্বরের একটি গড়কে মাপকাঠি ধরে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়।  এতো যতো নির্বাচিত হবে তাদের নাম ভিন্নভাবে প্রকাশ করা হবে। হ্যা, চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাওয়ার পর প্রত্যেক এক ও একাধিক খাতা যাচাইয়েরও প্রয়োজন হয়।’

এভাবে চার স্তরের হাইয়াতুল উলয়ার ফলাফল চূড়ান্ত করা হচ্ছে।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ