আলী হাসান তৈয়ব
সেদিন অফিসে যাব। বাসা থেকে নেমে পথে আসতেই একটা রিকশা এগিয়ে এলো। সালাম দিয়ে হাসি মুখে বলল, হুজুর ওঠেন। রিকশায় উঠেই বললাম, প্রচণ্ড রোদ; হুড তুলে দিন।
তারপর কথা বলতে বলতে গন্তব্যে গেলাম :
আমি : রোজা রেখেছেন?
চালক : জী হুজুর।
কয়টা করলেন?
সবগুলোই। আলহামদুলিল্লাহ আমি প্রতিবার রোজা রেখেই সারা মাস গাড়ি চালাই।
কয় বছর ধরে?
এক যুগের মতো হবে। আপনাদের দোয়ায় গাড়ি চালানোর অজুহাতে কোনোদিন রোজা ভাঙিনি।
কষ্ট হয় না?
কষ্ট ছাড়া তো জান্নাত পাওয়া যাবে না। এটা তেমন কষ্ট না। আল্লাহর জন্য কষ্ট করতেও সুখ লাগে। (মুখে তার হাসি লেগেই আছে।)
মুগ্ধ হয়ে জানতে চাইলাম কোথায় থাকেন?
বললেন, হুজুর, আমি তো আপনার পেছনেই জুমা পড়ি। আপনি সেদিন যে দোয়া শেখালেন সেটা আমি মুখস্ত করেছি। এ বলেই তিনি দোয়াটি শোনালেন।
মুগ্ধতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেল। তার পরিবার, বৈবাহিক অবস্থা, গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়ে খুঁটিনাটি সবই জানলাম। সবশেষ একদিন আমার সঙ্গে ইফতারের দাওয়াত দিয়ে নেমে গেলাম।
এবার রোজা গেল দীর্ঘতম দিনে প্রচণ্ড গরমে। তাকেই পেলাম প্রথম যিনি নিয়মিত রোজা রেখে রিকশা বাইছেন। হায় সুস্থ দেহে আর নেয়ামতে ডুবে থেকেও যারা ফরজ রোজা করেননি, তারা কী জবাব দেবেন! আমরা কি আল্লাহর যথাযথ শুকরিয়া আদায় করি? তিনি আমাকে কত সুখে রেখেছেন তা কী উপলব্ধি করি?
‘আব্বা কখনো বলতেন না এটা কর ওটা কর; বলতেন যোগ্য হও দীনের কাজ করো’