কাতার থেকে তামিম রায়হান
লেখক ও কলামিস্ট
সৌদিআরবের রাজধানী রিয়াদে আলজাজিরার অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দুদিন আগে। আলজাজিরার ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে সৌদি, আমিরাত ও বাহরাইন এবং তাদের কয়েকটি মিত্রদেশে।
শুধু তাই নয়, সৌদিআরবে পর্যটকরাও যেন আলজাজিরা দেখার সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে হোটেল মালিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আলজাজিরা দেখা গেলে এক লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা এবং লাইসেন্স বাতিলেরও সতর্কতা দিয়েছে সৌদি পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
হোটেলের প্রত্যেক রুমে রিসিভার না রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে চ্যানেল ঠিক করে চালানোরও আদেশ দিয়েছে এই কর্তৃপক্ষ।
কাতারের ইংরেজি দৈনিক পেনিনসুলার ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে আরব আমিরাতে। কিন্তু কাতারে এখনও দেখা যাচ্ছে সৌদি ও আরব আমিরাত এবং বাহরাইনের সবগুলো চ্যানেল। পড়া যাচ্ছে সব ধরণের পত্র পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
সংবাদমাধ্যমের প্রতি স্বাধীনতার ইস্যুতে কাতারের সাহসী উদারতা আর সৌদি-আমিরাত ও বাহরাইনের সংকীর্ণ বিদ্বেষ নিয়ে লেখালেখি করে আমার লাভ নেই। কারণ, তথ্যযুদ্ধে আলজাজিরার সামনে টিকতে না পেরেই যে এমন সিদ্ধান্ত, সেটি সাধারণ দর্শকও বোঝেন। তবে এই অঞ্চলের মানুষ মনে করছে, কাতারকে চেপে ধরার এই প্রক্রিয়ায় আলজাজিরা বন্ধ করে দেওয়া এবং হামাসকে বহিষ্কার করার এসব দাবি দাওয়া ইসরাইল থেকে আসা।
[caption id="" align="alignnone" width="604"] আল-জাজিরার কার্যালয়[/caption]
কারণ, গাজায় ফিলিস্তিনিদের দিকে ইসরাইলের সৈন্যদের কেউ গুলি ছোঁড়া দূরের কথা, গাজার কোনো শিশুর দিকে ইসরাইলি নরাধমরা চোখ বড় করে তাকালে সেটিই হয়ে যায় আলজাজিরার শীর্ষসংবাদ। তখনই বিপাকে পড়ে ইসরাইল। এতে ক্ষুব্ধ হয় ইসরাইলের আরবীয় দোস্ত আর মজলুমদের দুশমনরা।
সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যমে আলজাজিরাকে নিয়ে অব্যাহত অপপ্রচার দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, কাতারের আলজাজিরা কেবল সংবাদমাধ্যম নয়, বরং এটি একটি দুর্গ যেখান থেকে উচ্চারিত হয় নিপীড়িত মানুষের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।
লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে।
এসএস/