শাহনূর ইসলাম
মোঃ তাবারক হোসাইন। আমার বন্ধু, আমার দোস্ত। যে আমার মন পড়তে জানে। যদি কখনো অস্পষ্ট কিছু বলতে চাই! বলার আগেই ও বলে ফেলে আমি কী বলতে চাচ্ছি। ওর চোখের পানি আমার বুকে ঝড়ে, আমার চোখের পানি ওর বুকে ঝড়ে।
ফেসবুকে কখনো ওকে নিয়ে কিছুই লিখিনি। ও মাঝে মাঝে বলে আমি নাকি বড় হয়ে গেছি। তাই আমি ভাবতাম যদি সত্যিই কখনো বড় হতে পারি তখন চিৎকার করে বলব, তাবারক আমার দোস্ত।
কয়েকদিন আগেও ভেবেছিলাম ওকে নিয়ে মজার কিছু লিখব, কিন্তু তা আর হলো না। আজকে লিখতে হচ্ছে ওর জীবনের সবচেয়ে দুঃখের সংবাদটি জানিয়ে। ওর মাথার উপর থেকে ছায়ার মেঘ খন্ডের ন্যায় বস্তুটি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছে।
কারী জমির উদ্দিন। ছোটবেলায় যার কাছে পবিত্র কোরআন শিখেছি। আলিফ, বা, তা, ছা, পড়েছি। সেই প্রিয় মানুষটি চলে গেছেন দুনিয়ার মায়া ছেড়ে। তাবারকের আব্বা, মসজিদের সাথে যার দিল ঝুলে থাকতো সব সময়। আমার জন্মেররও অনেক আগ থেকে প্রায় আড়াই যুগের বেশি সময় ধরে আমাদের এলাকার মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন নিষ্ঠার সাথে।
বার্ধক্যজনিত কারণে গত তিন বছর আগে অবসর নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু অবসরে থাকতে পারেননি। মসজিদ ছাড়া ভালো লাগতো না তার। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাড়ির পাশেই গ্রামের মসজিদে ইমামতি করেছেন। গত শুক্রবারেও নামাজ পড়িয়েছেন। আজ তিনি নেই! গত রাত ২টার সময় পৃথিবীর মায়া ছেড়ে আল্লাহর ডাকে পাড়ি জমিয়েছেন
যাওয়ার অনেক আগেই বলে গিয়েছিলেন তার সমাধিটা যেন হয় মসজিদের পাশে। সারাজীবন মসজিদের সাথে কাটিয়ে এবার মসজিদের পাশেই ঘুমাতে যাচ্ছেন তিনি। আজ বাদ জোহর নান্টু মালতের বাজার (সখিপুর, শরীয়তপুর) স্থানীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাযা শেষে উস্তাদে মুহতারামকে সমাহিত করা হবে।
০৫.০৬.১৭ইং, সোমবার, সখিপুর, শরীয়তপুর।
লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে।
এসএস/