রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


হজরত ওমর রা. এর মতো রাতে ঘুরে বেড়ান ডিসি আবদুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ডেস্ক:  ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) তার নাগরিকদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখতে রাতের বেলা ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতেন।  দেখে গিয়ে পরে ব্যবস্থা নিতেন।  তারই যেন অনুসরণ করছেন খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ (ডিসি) কমিশনার (দক্ষিণ) আবদুল্লাহ আরেফ।

কেএমপির সদর, সোনাডাঙ্গা মডেল, হরিণটানা ও লবণচরা- এ চার থানা নিয়ে দক্ষিণ জোনের দায়িত্বে থাকা আরেফ প্রতিদিন রাত ১২টার দিকে চার থানা এলাকার কোনো না  কোনো রাস্তায় বের হন সাদা পোশাকে।

একা একা ঘুরে বেড়ান আর পরিবেশ-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।  এ সময় তার সঙ্গে থাকে না কোনো সরকারি গাড়ি কিংবা ওয়াকিটকি, অস্ত্র, বডিগার্ড।   তাকে দেখে কেউ অনুমানও করতে পারবে না তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

রবিবার (২৯ মে) দিবাগত রাত একটার দিকে নগরীর কেডিএ অ্যাপ্রোচ রোড হয়ে পায়ে হেঁটে মজিদ সরণির দিকে যাচ্ছিলেন এডিসি আবদুল্লাহ আরেফ।  হঠাৎ করেই তার সামনে জ্বলে ওঠে ক্যামেরার ফ্লাশ।

সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসেন তিনি।  কাছে এসে জানতে চাইলেন পরিচয়।  সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর একটু মৃদু হাসেন।  তবে পরিচয় গোপন রেখে শহরের রাতের পরিবেশ দেখার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় একটু যেন হতাশও হলেন।  এরপর তার সঙ্গে হেঁটে সোনাডাঙ্গা পর্যন্ত যেতে যেতে অনেক কথা হয়।

কেন তিনি এভাবে রাতের আঁধারে একা একা নগরীর রাস্তায় হাঁটেন? এডিসি আরেফ বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্রে অনেক কিছুই জানতে পারি, এটা ঠিক।  তার পরও গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই আমি রাতের বেলায় নিজ চোখে দেখি, দু-এক দিন পর তা নিয়ে অ্যাকশনে যাই। ’

কিছুদিন আগেও প্রতিদিন ভোরবেলায় খুলনা রেলস্টেশনের যাত্রীদের ব্যাগ, মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা ছিনতাই হতো।  এ কথা উল্লেখ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,  ‘বিষয়টি আমি জানান পর প্রায় এক সপ্তাহ ভিন্ন ছদ্মবেশে ওই সব স্থানে ছিলাম।

দু-একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা খুব কাছ থেকে দেখেছি।  এরপর ছিনতাইকারী চক্রের পুরো গ্যাং শনাক্ত করে তার প্রধানকে ধরে ফেললাম।  তার সহযোগীদের গুলিতে ক্রসফায়ারে অবশ্য সেই ছিনতাইকারীদের হোতা নিহত হয়েছে।  এরপর একে একে ওই চক্রের বেশির ভাগ সদস্যকে আমরা আইনের আওতায় নিয়েছি। ’

মাগুরা সদরের ফুলবাড়ি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম ফরহাদের ছেলে আব্দুল্লাহ আরেফ বলেন, বাবার আদর্শ ধারণ দেশের জন্য কিছু করতে চান।  আর এ জন্যই নিচ্ছেন নানা উদ্যোগ।

রাত দুইটায় রাস্তায় হাঁটাহাঁটি শেষে সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে যান আরেফ।  এরপর নিজের ওয়াকিটকি নিয়ে শুরু হয় চার থানার ওসিদের সঙ্গে সার্বিক অবস্থা নিয়ে আলাপ।  নিজেদের থানার প্রতিটি অলি-গলিতে পেট্রোল ডিউটি জোরদার, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য সবাইকে কয়েক দফা সতর্ক করেন তিনি।

রাতের আঁধারে শহরের অবস্থা ঘুরে দেখার গোপন মিশন ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তিনি দমে যাবেন তা নয়, নানা রূপে নানা বেশে তার এই পর্যবেক্ষণ চলতেই থাকবে বলে জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আব্দুল্লাহ আরেফ। এমটিনিউজ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ