সম্প্রতি গুলশানে অবস্থিত হোটেল রেইনট্রিতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত ধর্ষকদের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আজ শনিবার এক যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন তারা এ দাবি জানান। বিবৃতিতে তারা বলেন, হোটেল রেইনট্রিতে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত ধর্ষকদের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিপ্রদান এবং ভিকটিম দুই তরুণী যাতে ন্যায় বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে আমরা রাষ্ট্রের কাছে জোর দাবি জানাই।
নির্যাতিতা ও মজলুম দুই তরুণীর প্রতি আমরা পূর্ণ সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি।
মিডিয়া ও সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, নির্যাতিতা তরুণিদের ‘ধর্ষিতা’ বলে অভিহিত করবেন না, এটি নির্যাতিতা নারীর জন্য অবমাননাকর বলে আমরা মনে করি। ধর্ষিতা না বলে আপনারা নির্যাতনের শিকার একজন নারীকে ‘ভিকটিম’ বা ‘নির্যাতিতা’ বলুন।
ধর্ষণ সাপেক্ষে একজন ধর্ষক অপরাধী, কিন্তু একই শব্দ দিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার কোনো নারীকে ‘ধর্ষিতা’ বলে অভিহিত করা অবিচারের শামিল। কারণ ‘ধর্ষক’ এবং ‘ধর্ষিতা’- শব্দ দুটোই আমাদের সমাজে নেতিবাচক; তাই আমরা নির্যাতিতা নারীদের সম্মান ও ভবিষ্যৎ রক্ষার্থে ‘ধর্ষিতা’ শব্দের ব্যবহারের বিরোধী করছি।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, গুলশানের মতো অভিজাত পাড়ায় এমন জঘন্য ধর্ষণের ঘটনা আমাদের সমাজের মধ্যে গভীর পচন ও অবক্ষয় প্রতীয়মান করে। বিচারহীনতার সুযোগে শুধু অভিজাতপাড়ায় নয়, সারা দেশেই ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি সহিংসতা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ন্যায় ভিত্তিক শাসনের অভাব ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছাড়াও কোরআন-সুন্নাহ থেকে মানুষের দূরে সরে যাওয়াই এর মূল কারণ।
আজকে নারী স্বাধীনতা ও নারীর ক্ষমতায়নের পৃষ্ঠপোষক তথাকথিত এই আধুনিক রাষ্ট্র প্রকৃত পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেব্যার্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
তাই এমতাবস্থায় আমরা ছেলেদের বলবো, আপনারা নিজেদের চোখের পর্দা করুন, লজ্জাস্থানকে হেফাজত করুন, আল্লাহকে ভয় করুন।
কোরআন-সুন্নাহের পথে জীবন গঠন করার চেষ্টা করুন। আর মেয়েদেরকেও বলছি, আপনারা ছেলেদের সাথে অবাধ মেলামেশা করবেন না। পর্দা অথবা হিজাব পরিধান করে চলাফেরা করুন যা আপনাদেরকে তুলনামূলকভাবে আরো নিরাপদ করবে।
আল্লাহকে ভয় করে এই ফরজ বিধান মেনে চলুন। পর্দানশিন দ্বীনদার নারীর ভূমিকা একটি রাষ্ট্র ও সমাজে অভাবনীয় সমৃদ্ধি, শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তারা বলেন, ধর্ষণ, ব্যাভিচার ও সমকামিতা, এগুলো জঘন্যতম অপরাধ। এগুলো বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ হলো, দেশে কোরআন-সুন্নাহ ও দ্বীনের চর্চা কম হচ্ছে। কোন্দল ও অবাধ পাপাচারে জড়িয়ে পড়ছে।
এমনটা চলতে থাকলে আল্লাহর নানামুখী আজাব-গজবে আমরা পতিত হবো। সুতরাং যাবতীয় পাপাচার ও জুলুম দূরীভূত করতে আমাদের জাতীয় জীবনে ঈমান-আক্বিদার সংরক্ষণ ও কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের বিকল্প নেই।
এসএস/