বাহারি শটের মেলা। চোখধাঁধাঁনো ফিল্ডিং। অতিনাটকীয় সেলিব্রেশন। দর্শকদের উৎসাহ। আইপিএলে কী নেই! সঙ্গে যোগ করুন অখ্যাত ক্রিকেটারদের রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাওয়ার অবিশ্বাস্য সব কাহিনি। এ বারের আইপিএলের কথাই ধরুন না কেন। উঠে আসবে অন্তত দু’জন ক্রিকেটারের নাম। থাঙ্গারাসু নটরাজন ও মহম্মদ সিরাজ। আমজনতা তাঁদের নাম শুনেছেন কি না, তা নিয়েই ঘোরতর সন্দেহ রয়েছে। তবে দশম আইপিএলের সৌজন্যে এক রাতেই তাঁরা কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন। তবে বিডিং প্রাইসের যে পরিসংখ্যান সামনে আসে তার সবটাই কি ক্রিকেটারদের পকেটে যায়?
সে গল্প শোনানোর আগে নজর ঘোরানো যাক চলতি আইপিএলের দু’জন ক্রিকেটারের দিকে। যাঁরা একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে উঠে এসেছেন। এঁদেরই এক জন ২৫ বছরের নটরাজন তামিলনাড়ুর হয়ে রঞ্জি খেলেছেন। মূলত মিডিয়াম পেসার নটরাজনের ব্যাটের হাত সে রকম আহামরি নয়। তবে এ বারের আইপিএলে কিঙ্গস ইলেভেন পঞ্জাব তাঁকে তুলে নিয়েছে তিন কোটি টাকায়। নটরাজনের বাবা রেলে কুলির কাজ করেন। মা সবজি বিক্রেতা। ফলে পারিবারিক ভাবে অসচ্ছল হলেও আর্থিক দিক থেকে অন্তত তাঁর স্বপ্নপূরণ করেছে আইপিএল। নটরাজনের কাহিনির সঙ্গেই বেশ মিল রয়েছে সিরাজের। হায়দরাবাদের হয়ে রঞ্জিতে অভিষেক তাঁর। ডান হাতি এই ফাস্ট-মিডিয়াম পেসার ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে এ বারের আইপিলে খেলছেন। এ সবই হল তাঁদের বিডিং প্রাইস।
আইপিএলে দু’ধরনের চুক্তি হয়:
১) প্রথম ধরনের চুক্তিকে বলা হয় ফার্ম এগ্রিমেন্ট। এতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) থেকে একটা বাধাধরা অঙ্কের ( ফিক্সড প্রাইস) পারিশ্রমিক ক্রিকেটার। বিডিং প্রাইসের সঙ্গে সেই ফিক্সড প্রাইসের যে পার্থক্য রয়েছে তা বিসিসিআই-এর কোষাগারে ঢুকে।
২) বেসিক এগ্রিমেন্ট। এই চুক্তিতে ক্রিকেটার বিডিং অ্যামাউন্ট ঘরে নিয়ে যেতে পারেন। তবে গড়ে ৮০ লাখ টাকা রোজগার করেন ক্রিকেটাররা। এছাড়াও প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের উপর বছরে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি ক্রিকেটারের জন্য প্রতি দিন ১০০ ডলারের খরচও।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারেরা নিজের দেশের হয়ে খেলার জন্য যে কোনও সময় আইপিএল ছেড়ে যেতে পারেন। তবে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা নিজেরাই ঠিক করতে পারেন, তিনি আইপিএল খেলবেন না ঘরোয়া টুর্নামেন্টে খেলবেন।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা