আওয়ার ইসলাম: ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের সঙ্গে দেখা করতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছেছেন তার পরিবারের চার সদস্য ।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে মুফতি হান্নানের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে আসেন তার ভাই আলিমুজ্জামান মুন্সী, স্ত্রী জাকিয়া পারভীন রুমা ও দুই মেয়ে।
জেল সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুফতি হান্নানের পরিবারের সদস্যদের তার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ভেতের পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে তারা কথা বলা শুরু করেছেন।’
এর আগে, মুফতি হান্নানের সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে পাঠানো চিঠি তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া থানায় পৌঁছায় মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই কোটালিপাড়া থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুফতি হান্নানের পরিবারের সদস্যরা।
তবে মুফতি হান্নানের মা রাবেয়া বেগম তার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন না, এটা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘মুফতি হান্নান সরকারের কাছে অপরাধী হলেও আমার কাছে নয়। সে কি ধরনের কাজ করেছে তা জানি না। তবে আমার সামনে কখনও খারাপ কাজ করেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার তাকে শাস্তি দিলেও তাতে তার আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের নিরপরাধ মানুষগুলোকে যেন হয়রানি করা না হয়।’
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) জানান, নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালেই মুফতি আবদুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে বলা হয়। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কেউ দেখা করতে যাননি। মুফতি হান্নানের স্বজনরা বুধবার সকালে দেখা করতে যাবেন বলে জানা গিয়েছিল পুলিশ সূত্রে। এ প্রসঙ্গে জেল সুপার বলেছিলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। তবে স্বজনরা এলে তাদের সঙ্গে দেখা করানো হবে।’
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে গ্রেনেড হামলায় আনোয়ার চৌধুরীসহ আরও অনেকে আহত হন। নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সম্পূরক চার্জশিটে আরেক জঙ্গি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালের নাম অন্তর্র্ভুক্ত করা হয়।
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ও মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এরপর উচ্চ আদালতে তারা আপিল করলে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর তারা রিভিউ আবেদন করলে সেটাও গত ২২ মার্চ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এসএস