শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা

যে মাদরাসায় অমুসলিম ছাত্রই বেশি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

madrasha_kalkataমাদরাসা মানে শুধু মুসলিম পড়ুয়া নয়। এ রাজ্যের অন্তত পাঁচটি মাদরাসায় অ-মুসলিম পড়ুয়ারাই সংখ্যায় বেশি।

মাদরাসা পর্ষদ সূত্রে খবর, বর্ধমানের ওড়গ্রাম চতুষ্পল্লি হাইমাদরাসা, হুগলির দাবরা হাইমাদরাসা, পুরুলিয়ার হুড়া মুজাফফর আহমেদ অ্যাকাডেমি হাইমাদরাসা, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ইসলামিয়া হাইমাদরাসা এবং উত্তর দিনাজপুরের কসবা এম এম হাইমাদরাসায় অমুসলিম পড়ুয়ারা সংখ্যাগুরু।

ওড়গ্রামে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১২৩০। এর মধ্যে অ-মুসলিম ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮০০। দাবড়ায় ২৫৬ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে অ-মুসলিম পড়ুয়ার সংখ্যা ১৫৭। পুরুলিয়ার হুড়ায় ১৩৬০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৭২০ জন অ-মুসলিম। চন্দ্রকোনায় ৩৮৩ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ২২৫ জন আর উত্তর দিনাজপুরের কসবায় ৫৯৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৩২০ জন পড়ুয়া অ-মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত।

ওড়গ্রাম হাইমাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র, বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত সায়ন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাদরাসা মানেই কেবল মুসলিম পড়ুয়ারা পড়বে, সাধারণ মানুষের মনে এটা একটা ভুল ধারণা রয়েছে। ওড়গ্রাম চতুষ্পল্লি হাইমাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি গর্বিত। ওই মাদরাসার স্যারেদের জন্যই আমি এত দূর পৌঁছতে পেরেছি।’’

পুরুলিয়ার হুড়া মুজাফফর আহমেদ অ্যাকাডেমি হাইমাদরাসার প্রাক্তন ছাত্রী মিতালি মাহাতো বর্তমানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নার্সিং-এ স্নাতক পড়ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘হুড়ার মাদরাসা পড়াশোনার সময় কখনওই জাতপাতের কথা মনে হয়নি। আরবি পড়ে ক্লাসে ভালে নম্বরও পেয়েছি। বর্তমান সময়ে সাম্প্রদায়িকতা যখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে তখন এমন মাদরাসা সম্প্রীতির মডেল হওয়া উচিত।’’

ঠিক একই কথা বললেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদরাসা শিক্ষা সংগঠনের সভাপতি এ কে এম ফারহাদ-ও। তাঁর কথায়, ‘‘মাদরাসা সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার বদল হওয়া দরকার। মামাদরাসাসার সার্বিক উন্নয়নে এই পাঁচটি মাদরাসা সারা রাজ্যে  মডেল হওয়া উচিত।’’

এ রাজ্যে বর্তমানে মাদরাসা পর্ষদ পরিচালিত ৬১৪টি মাদরাসা রয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সঙ্গে মাদ্রাসা পর্ষদের সিলেবাসে তফাৎ একটাই। মাদরাসা পর্ষদে বাড়তি বলতে ১০০ নম্বরের আরবি সাহিত্য।

হুড়া মুজাফফর আহমেদ অ্যাকাডেমি হাইমাদরাসার প্রধান শিক্ষক আহমাদুল্লাহ আনসারি বলেন, ‘‘আমাদের মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র অনন্ত টুডু আরবিতে সর্বাধিক নম্বর পেয়ে বর্তমানে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি অনার্স নিয়ে পড়়াশোনা করছে।’’

পাঁচটি মাদরাসাতেই অ-মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীরা সংখ্যায় বেশি। মাদরাসা পর্ষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবিদ হোসেন বলেন, ‘‘পাঁচটি মাদরাসার এক কিলোমিটারের মধ্যেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত বিদ্যালয়ও রয়েছে। তা সত্ত্বেও অ-মুসলিম পড়ুয়ারা মাদরাসায় ভর্তি হয়েছে।’’

মাদরাসা পর্ষদ সচিব রেজওয়ানুল করিম তরফদার বলেন, ‘‘সমাজের বড় অংশের মধ্যে আসলে মাদরাসা সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে। রাজ্যের পাঁচটি মাদরাসায় অ-মুসলিম ছাত্রদের সংখ্যাধিক্য সেই ভুলটাই ভেঙে দিল।’’

সূত্র: আনন্দবাজার


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ