মেয়েদের সব ধরনের কোমল ও নম্র ব্যবহার বাইরের মানুষদের জন্য বরাদ্দ। উন্নত রুচি, শান্ত কোমল কণ্ঠস্বর, মুচকি হাসি, উচ্ছসিত চেহারা- এ সবই অতিথি ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য। এগুলো তদের সামাজিকতা রক্ষার হাতিয়ার। আর স্বামীর জন্য? স্বামীর জন্য হলো ভাবাবেগহীন যান্ত্রিক কথাবার্তা এবং বিরক্তি মেশানো ভ্রু কুচকানো চাহনি।
তাদের সাজ-সজ্জা-সৌন্দর্য এ সবও বাইরের মানুষের জন্য। বাইরে বের হবার আগে যত সাজ-গোজের বাহার আর পারফিউম মাখামাখি। কিন্তু স্বামীর সামনে? স্বামীর সামনে চুল থাকে এলোমেলো উষ্কখুষ্ক। চেহারার ভাব হয়ে থাকে যুদ্ধের মানচিত্রের মত। শরীর থেকে অনবরত মসলা, পেঁয়াজ, রসুন এসবের দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। দুর্গন্ধ তার আগেই তার স্বামীর কাছে পৌঁছে যায়। আর স্বামী যে মানুষটি, তিনি যে একেবারে ধোয়া কচুপাতার মত নিষ্পাপ, তা কিন্তু না। সেও স্ত্রীর সাথে এমন আচরণই করে থাকে।
বাড়িতে ডাইনিংরুম আছে, ডাইনিংটেবিল আছে। কিন্তু এগুলো হলো শুধু বাইরের মানুষের জন্য, মেহমানদের জন্য। মেহমান এলে তাদের জন্য টেবিল সাজানো হবে, আলাদা প্লেট-বাটি নামানো হবে। পুরো ডাইনিংরুমটাকে সাজানো হবে। কিন্তু যদি মেহমান না থাকে, তাহলে খাওয়া-দাওয়ার পুরো ব্যাপারটা হবে রান্নাঘরে!
মেহমানের বিশ্রামের জন্য আলাদা কামরা। সে কামরার সব কিছু পরিপাটি। দামি কাপড়ে নকশাদার সেলাই করা চাদর, বালিশের কভার। কিন্তু নিজেরা যেখানে থাকছে, সেখানে বিছানা ও বালিশের কোন বালাই নেই। না আছে লেপ তোশকের কভার, না আছে বালিশের কভার। সবই মেহমানের জন্য।
এই লোকদেখানো সামাজিকতার কারণে আমরা নিজেরাই আমাদের হাত-পা বেধে রেখেছি অর্থহীন কিছু নিয়মকানুনের বেড়াজালে।
[মাআননাস : আলী তানতাবী كل شيء للناس ]