আওয়ার ইসলাম : বাংলা ভাষাকে তাচ্ছিল্য করে শেষ রক্ষা হয় নি পাকিস্তানি শাসকদের৷ এক সময় বাংলাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয় তারা। কিন্তু তাদের বিরোধিতায় বাঙালিদের মধ্যে জন্ম নেয় বাঙালি জাতীয়তাবোধ। যার ফলে এক সময় স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। তাই বাংলা ভাষার সঙ্গে পাকিস্তানিদের শত্রুতা আজন্ম। কিন্তু সেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সৌধে জ্বলজ্বল করেছে বাংলা৷
মিনার এ পাকিস্তান৷ স্বাধীনতা পরবর্তী পাকিস্তানের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য৷ লাহোরের ইকবাল পার্কের অবস্থিত এই মিনারের ভিত্তি স্তম্ভে বাংলা, উর্দু, ইংরাজিতে লেখা আছে লাহোর প্রস্তাব বা পাকিস্তান প্রস্তাবের বিবরণ৷ ১৯৪০ সালে সারা ভারত মুসলিম লিগের লাহোর সম্মেলনে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র ‘পাকিস্তান’ তৈরির সেটাই প্রথম সাংগঠনিক প্রক্রিয়া৷
তখন পাকিস্তান জুড়ে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক জমানা৷ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন তিনি৷ ১৯৫৮-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন আয়ুব খান৷ তাঁর আমলেই ১৯৬০ সালে লাহোরের ইকবাল পার্কে মিনারটি তৈরির কাজ শুরু হয়৷ শেষ হয় ১৯৬৮ সালে৷ তক্ষশীলা থেকে আনা বিশেষ পাথর দিয়ে তৈরি এটি৷ ৭০ মিটার উঁচু৷ মোগল স্থাপত্যের অনুকরণে তৈরি মিনারটির মুখ লাহোরের বিখ্যাত বাদশাহী মসজিদের দিকে৷
বিখ্যাত লাহোর প্রস্তাব (The Lahore Resolution) উত্থাপিত হয়েছিল ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ সারা ভারত মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশনে৷ এ কে ফজলুল হক এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন৷ মিনার পাকিস্তানের গায়ে সেই প্রস্তাবনাটি লেখা রয়েছে৷
৬৮ সালে লাহোরের ইকবাল পার্কে বিখ্যাত লাহোর প্রস্তাবের বাংলা অনুবাদটি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার৷ সেখানেই যেন বিজয়ের ইঙ্গিত ধরা দিয়েছিল৷
-এআরকে