আওয়ার ইসলাম: হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণের দাবি জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আজ এক যুক্তবিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রীম কোর্টের প্রবেশ পথে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপনের বিষয়ে হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার সর্বোচ্চ স্থান সুপ্রীম কোর্ট-প্রাঙ্গণে কথিত ন্যায়ের প্রতীক নগ্ন-অশ্লীল দেবী থেমিসের মূর্তি স্থাপন হচ্ছে চরম ধৃষ্টতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের অবমাননা। যা এদেশের তৌহিদি জনতার ঈমানী চেতনা, ধর্মীয় ভাবধারা ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে এবং সেইসাথে এটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের নিজস্ব ইতিহাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও আত্মমর্যাদাবোধেরও সম্পূর্ণ বিপরীত ও সাংঘর্ষিক। গ্রিক দেবীর মূর্তি নয়, মুসলমানদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক হলো মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন। মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলামে মূর্তি স্থাপন হারাম। হাদীস শরীফে রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর নিকট সর্বাধিক আযাব প্রাপ্ত লোক হবে মূর্তি প্রস্তুতকারীগণ। ইসলামে মূর্তি স্থাপন, মূর্তিকে সম্মান জানানো এবং ন্যায়ের প্রতীক মনে করা শিরক।
হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, রোমানদের কাছে ন্যায়ের প্রতীক কল্পিত গ্রিক দেবীর সাথে এই দেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও ভাব-সম্পদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই, তার পরও কীভাবে আমাদের হাইকোর্টের সামনে এরকম অগ্রহণযোগ্য ও বিজাতীয় মূর্তিকে স্থাপিত করা হলো? কারা কী উদ্দেশ্যে এটি করার সুযোগ পেলো কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দেশের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। দেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তা চেতনার পরিপন্থি গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। গ্রিকপুরাণের কল্পিত দেবী থেমিস রোমানদের কাছে ন্যায়ের প্রতীক হতে পারে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে ধার করে কেন হীন ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা লালন করবো? আমরা ভূইফোঁড় কোনো জাতি নই যে, পরজীবিতার আশ্রয় নিতে হবে।
তারা আরো বলেন, মুসলমানরা স্থাপত্যকলা ও শিল্পকলার বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপনপূর্বক আমাদের জাতীয় মন ও মানসে বিজাতীয় কৃষ্টির অনুপ্রবেশ আমরা বরদাশত করব না। এছাড়া সময়ান্তরে মানব-প্রতিকৃতি এবং পৌত্তলিক ধ্যানধারণার সাথে সম্পৃক্ত বিশেষ জীব-জানোয়ারের মূর্তি তৈরি করে সেগুলোকে ঢালাওভাবে ‘বাঙালি সংস্কৃতি’ বলে সর্বজনীন করার অপরাজনীতিও আমরা রুখে দিতে বদ্ধপরিকর।
হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, আলেমসমাজ দেশের কল্যাণকামী। সুতরাং এদেশের আলেমসমাজ ও বৃহত্তর তৌহিদি জনতা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবে না, বরং এটি সরকারের বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতার ঘৃণা ও ক্ষোভকেই আরো উসকে দেবে। সরকারের নিকট আমাদের দাবী হলো, অবিলম্বে এই মূর্তি অপসারণ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ তৌহিদি জনতার ক্ষোভ প্রশমিত করুন, অন্যথায় ধর্মপরায়ন জনগণের সমর্থন হারালে এবং তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
এআর