আওয়ার ইসলাম: ইন্দোনেশিয়ায় অ্যালকোহলযুক্ত বেভারেজ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন দেশটির একদল রক্ষণশীল মুসলিম রাজনীতিক। তারা চাইছেন দেশটিতে এর উৎপাদন, বিতরণ এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হোক।
ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টের এক তৃতীয়াংশেরও কম আসন নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির মুসলিম দলগুলো। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রক্ষণশীলরা নিজেদের আরও বেশি পরিমাণে জাহির করছে।
২০১৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার ছোটখাটো মুদি দোকানগুলোতে বিয়ার বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির কর্তৃপক্ষ। গবেষণা সংস্থা ইউরোমনিটর বলছে, এতে বিয়ারের বিক্রি কমেছে ১৩ শতাংশ।
এখন কাজ চলছে অপলোসান নামে পরিচিত ঘরে তৈরি চোলাই মদের উৎপাদন সীমিত করার। বলা হচ্ছে, অ্যালকোহল সংক্রান্ত কারণে ইন্দোনেশিয়া অনেকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের অবশ্য বিরোধিতাও করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, এটা দেশের বৈচিত্র্যের প্রতি অপমান। ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে বহু বিশ্বাসের মানুষেরা রয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও হিন্দুদের বসবাস ইন্দোনেশিয়ায়।
জনসংখ্যার দিক থেকে দুনিয়ার বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। একটি মধ্যপন্থী মুসলিম দেশ হিসেবে এর সুনাম রয়েছে। তবে দেশটির ক্রমবর্ধমান মৌলবাদ নিয়েও কেউ কেউ উদ্বিগ্ন।
আলেমদের রাষ্ট্র সমর্থিত সংস্থা ইন্দোনেশিয়ান উলেমা কাউন্সিল (এমইউআই) সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমকামিতা ও বহুকামিতার নিন্দা জানিয়ে আসছে।
পর্নোগ্রাফি-বিরোধী কঠোর আইন পাস করেছে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট। বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে অপরাধমূলক হিসেবে বিবেচনা করতে আদালতে প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কিছু রক্ষণশীল মুসলিম গ্রুপ। সম্ভাব্য নতুন অ্যালকোহল-বিরোধী নিষেধাজ্ঞার আওতায় অ্যালকোহল পানের শাস্তি হিসেবে দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
অ্যালকোহল সামগ্রী প্রস্তুতকারীরা বলছেন, অ্যালকোহল পান ইন্দোনেশিয়ার দীর্ঘদিনের পুরনো ঐতিহ্য। এটিকে পশ্চিমা অবক্ষয় বলে নিন্দার কিছু নেই।
ইন্দোনেশিয়ায় অ্যালকোহল সামগ্রীর শীর্ষ উৎপাদক প্রতিষ্ঠান মাল্টি বিনটাং। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মাইকেল চিন দ্য ইকোনমিস্ট’কে বলেন, ‘এটা ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতির একটা অংশ।’
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে ২০১৪ সাল থেকে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ। স্বশাসিত এই প্রদেশটিতে শরিয়া আইন চালু রয়েছে। এখানে কঠিন নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে যে কাউকে শাস্তিস্বরূপ ছয় থেকে নয়টি বেত্রাঘাতের সম্মুখীন হওয়ার বিধান রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, ইন্দোনেশিয়ানরা বছরে মাথাপিছু এক লিটারের কম অ্যালকোহল পান করেন।
সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট
আরআর