আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন, ধর্ষণ ও হত্যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। সর্বশেষ চলতি বছরের অক্টোবরে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম।
তবে মিয়ানমার সরকারের দাবি, বাংলাদেশ মাত্র ২ হাজার ৪১৫ জন রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। তারা ২০১৭ সালে তাদেরকে ফেরত নেয়ার পরিকল্পনা করছে। মিয়ানমার সরকারের এমন তথ্য ও মন্তব্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে তামাশা করার নামান্তর।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা নাগরিকদের সংখ্যা নিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক কিয়াও জায়া রয়টার্সকে বলেন, 'আমাদের পরিসংখ্যান মতে সেখানে মাত্র ২ হাজার ৪১৫ জন মিয়ানমার নাগরিক রয়েছেন।'
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া তিন লাখ রোহিঙ্গার বিষয়ে 'কোনো ধারণা নেই' জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা সব সময় আমাদের সংখ্যার কথাই বলবো।'
তিন লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে উল্লেখ করে এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'মিয়ানমারের সকল নাগরিককে দ্রুত ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানাতে' ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে।
মিয়ানমার গত কয়েক দশক ধরে বলে আসছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী। তাদেরকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে দেশটি।
বাংলাদেশের দাবি, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। গত কয়েক দশক ধরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের 'শরণার্থীর মর্যাদা' দিতে অস্বীকার করে আসছে ঢাকা।
অক্টোবরে বাংলাদেশ সীমান্তে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নয় সদস্য নিহত হলে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইনে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এতে কয়েকশ' নিহত ও বহু আহত হন। এছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বহু রোহিঙ্গা নারী।
এই অভিযানে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে। অভিযানের মুখে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। অবশ্য জাতিসংঘের মতে, এ সংখ্যা ৩৪ হাজার।
জাতিসংঘের মতে, বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী হচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলিমরা। 'জাতিগত নিধন' বন্ধের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ারও আহ্বান জানিয়ে আসছে বিশ্ব সংস্থাটি।
ডিএস