শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মুসল্লির পদভারে মুখরিত সুরমাতীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[caption id="attachment_18856" align="alignleft" width="500"]???????????????????????????????????? ফাইল ছবি[/caption]

ইলিয়াস মশহুদ: ৩২ বছর পর বিভাগীয় নগরী সিলেটে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের অন্যতম আয়োজন জেলা ইজতেমা। তবে তাবলীগের রেওয়াজ অনুযায়ী গতকাল ফজরের নামাযের পর আম বয়ান দিয়ে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এবারের সিলেট জেলা ইজতেমাকে কেন্দ্র করে সিলেটবাসীর মাঝে কাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। বাড়ির কাছে ইজতেমা হওয়ায় মুরুব্বীদের কৃতজ্ঞতা ও আল্লাহর শুকর জ্ঞাপন করছে স্থানীয় মুসল্লিরা। দীর্ঘ এক মাস স্বেচ্ছাশ্রমে প্রস্তুত করা হয়েছে ইজতেমা মাঠ। মাঠের কাজ আঞ্জাম দিতে প্রতিদিন স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন স্থানীয় জনগণ, মাদরাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ সরকারি কর্মকর্তারাও।

দ্বীনের কাজে অনুপম এই স্বেচ্ছাশ্রম দেখে অবিভূত হয়ে অনেক মুসলমান মতাদর্শগত বিরোধ ভুলে গিয়ে পেয়েছেন সত্যের দিশা। বাদ ফজর আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হওয়া তিনব্যাপী ইজতেমা আগামী শনিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের সিলেট-সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়কে পাশে লতিপুর-খিদিরপুর এলাকায় আয়োজিত ইজতেমা মাঠে তীব্র ঠাণ্ডা আর কোয়াশা উপেক্ষা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সমবেত হয়েছেন মুসল্লিরা। ইতিমধ্যে প্রায় লক্ষাধিক মুসল্লিদের সমাগম ঘটেছে। দিন গড়ার সাথে সাথে মুসল্লিদের আগমনও বাড়বে। তবে বিদেশি মুসল্লিরা দু’একদিন আগেই ইজতেমাস্থলে এসে পৌঁছেছেন।

ইজতেমার ময়দানে নিরাপত্তায় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে চার স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সেখানে একটি ক্যাম্প, কন্ট্রোল রুম এবং ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

এছাড়া বিভিন্ন দাতা সংস্থা আগত মুসল্লিদের সেবা দিতে ইজতেমা ময়দানে আশপাশে নিজ নিজ উদ্যোগে সেবা সেন্টার খুলেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অসুস্থদের জরুরিভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হিসেবে আল মারকাজুল খায়েরী আল ইসলামীর অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক ইজতেমা মাঠে থাকবে। রেডক্রিসেন্টের পক্ষ থেকেও একটি হেলথ ক্যাম্প খোলা হয়েছে। নর্থইস্ট হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল, পানীয় জল কোম্পানী, ঔষধ কোম্পানী, র‌্যাব, পুলিশ বিভাগ, জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন মুসল্লিদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। পয়:নিষ্কাশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার অস্থায়ি লেট্রিন।

ইজতেমা উপলক্ষে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সাড়ে ১৫ লক্ষ বর্গফুট আয়তনের বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণসহ মাঠ প্রস্তুত করায়েছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত মুসল্লিদের ১১ টি খিত্তায় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশী অতিথিদের জন্য তিনটি আলাদা পাকা শেড নির্মাণ করা হয়েছে।

সিলেট জেলা ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির একজন জানান, ইজতেমার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। মুসল্লিদের ওজু-গোসলের জন্য ১১টি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পিডিবির পক্ষ থেকে ২টি নতুন ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সিলেটের জন্য এটাই বিশ্ব ইজতেমা, কারণ এবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় সিলেট অংশগ্রহণ না-করার জন্যই এই জেলা ইজতেমা। এভাবে দেশের ৩২টি জেলায় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ