বিদায় নিচ্ছে ২০১৬। একটি ঘটনাবহুল বছর। অনেক উত্থান আর পতনের বছর এটি। অনেক কান্না আর আক্ষেপের বছর। আসুন চলে যাওয়ার আগে একবার ফিরে দেখি বিষয়গুলো। লিখেছেন দিদার শফিক
রোহিঙ্গা সঙ্কট; কাদাচ্ছে বিশ্ব
বছরের শেষ দিকটাতে এসে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করে। সঙ্কটের সূচনা গত ৯ অক্টোবর। বৌদ্ধদের নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের ওপর চড়াও হয় সেনারা। কয়েকটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং মুসলিম দেখলেই হত্যা ও নারীদের ধর্ষণ করতে থাকে। এ অবস্থায় চরম মানবতার বিপর্যয় ঘটে। সেখানে থাকতে না পেরে হাজার হাজার মানুষ নাফ নদী পারি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ২২ হাজার রোহিঙ্গা টেকনাফে অনু্প্রবেশ করেছে।
যতই দিন যাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রই প্রশ্ন করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ, ওআইসি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বিশ্ববিবেক আজ কোথায়? ইউএনএইচসিআর, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কয়েকটি সংস্থা মৃদুকণ্ঠে মিয়ানমারের নিষ্ঠুর নিপীড়নের ব্যাপারে উদ্বেগ জানালেও তাতে সাড়া মিলছে না। এসব সংস্থা বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিতেও বলছে। কিন্তু বাংলাদেশে থাকা কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর কোনো চাপ দিচ্ছে না তারা।
মিয়ানমারের মানবিক বিপর্যয় এখনো অব্যাহত। প্রতিদিনি নির্যাতিত এসব মুসলিম বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছেন কিন্তু তাদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বহু রোহিঙ্গা মারা যাচ্ছে জঙ্গলে এবং নদীতে ডুবে। মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে বড় আঘাতটি দিয়ে গেছে রোহিঙ্গা সঙ্কট।
বিমান দুর্ঘটনা ও জুনায়েদ জামশেদের মৃত্যু
৭ ডিসেম্বর ২০১৬। পাকিস্তানে ভয়াবহ একটি বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। দেশটির বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাসে এটি পঞ্চম ঘটনা। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) পিকে-৬৬১ নামের একটি ফ্লাইট ৪৭ জন আরোহীসহ বিধ্বস্ত হয়। পাকিস্তানের চিত্রাল নগরী থেকে রাজধানী ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এ বিমানের একটি ইঞ্জিন অকেজো হয়ে গেলে এ বিষ্ফোরণ ঘটে।
স্থানীয় সময় বুধবার বিকাল ৪টা ৪২ মিনিটে অ্যাবোটাবাদের ২০ কিলোমিটার দূরে হাভেলিয়ানে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় যাত্রীদের কেউ বাঁচেনি। বিমানে আগুন ধরে গিয়ে সব যাত্রী পুড়ে যায়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের লাশ শনাক্ত করা হয়।
বিমানতে ৩১ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ২টি বাচ্চা ছিল। এদের মধ্যে আশি ও নব্বই দশকের খ্যাতনামা পাকিস্তানি পপ তারকা ও পরে ধর্মপ্রচারকে পরিণত হওয়া জুনায়েদ জামশেদ ও তার স্ত্রী নেহা জামশেদ এবং তিন বিদেশি ছিলেন। বিদেশিদের মধ্যে দুই জন অস্ট্রেলীয় এবং একজন চীনা নাগরিক বলে জানা গেছে। পাঁচজন ক্রু সদস্য ও একজন গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ও ছিল। এর আগে ২০১০ সালে ভারী বৃষ্টির মধ্যে ইসলামাবাদের কাছে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৫২ আরোহীর সবাই মারা যান। এর দুই বছর পর দেশটির একটি বেসরকারি কোম্পানির বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১২৭ আরোহীর মৃত্যু হয়।
পিআইএ’র বিমানেরও বড় ধরনের দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৯ ও ১৯৯২ সালে সৌদি আরবের জেদ্দা এবং নেপালের কাঠমাণ্ডুতে তাদের দুটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৬ ও ১৬৭ জনের মৃত্যু হয়।
৭ ডিসেম্বরের বিমান দুর্ঘটনায় যে বিষয়টি মুসলিম বিশ্বের জন্য ছিল চরম বেদনাদায়ক তা হলে জুনায়েদ জামশেদের মৃত্যু। ৫২ বছর বয়সী এ সংগীত শিল্পী চমৎকার কণ্ঠের মাধ্যমে কোটি কোটি আল্লাহওয়ালার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়ে গোটা মুসলিম দুনিয়া।
বোরকা-বুরকিনি নিষিদ্ধ
ফ্রান্সের বুরকিনি নিষিদ্ধের বিষয়টি বছরের দীর্ঘ সময় আলোচনায় ছিল। বিকিনির বিকল্প হিসেবে প্রধানত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ব্যবহার করেন। সেই বুরকিনি পরা নিষিদ্ধ হল ফ্রান্সে। এ নিয়ে তিনবার বুরকিনি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হল সেখানে। আর এ বছর থেকে সুইজারল্যান্ডের তিচিনো অঞ্চলে প্রকাশ্য স্থানে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বোরকা বা বুরকিনি নিষিদ্ধের হাওয়া ইতালি ছাড়িয়ে বছর শেষে জার্মানিতেও লেগেছে। দেশটির চেন্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল দেশটিতে নিরাপত্তার অযুহাতে সেদেশে বোরকা নিষিদ্ধের আহ্বান জানায়। বিষয়টি আলোচনায় আসে মুসলিম বিশ্বে।
ঢাকার গুলশানে জঙ্গি হামলা
১ জুলাই ২০১৬। গুলশান-২ এর হলি আর্টিজান বেকারি নামে স্প্যানিশ রেস্টুরেন্টে ৭-৮ জন যুবক রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা করে। তারা সাধারণ মানুষকে ভেতরে জিম্মি করে রাখে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার এটাই প্রথম ও বড় দুর্ঘটনা। এ অভিযানের মাধ্যমে ৩ জন বিদেশি যার মধ্যে ১ জন জাপানি এবং ২ জন শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আর অভিযানের পর তল্লাশি শেষে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের অধিকাংশকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
সন্ত্রাসীদের ৭ জনের মধ্যে ৬ জন নিহত এবং ১ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলায় নিহত হয়েছেন তিন বাংলাদেশি, এক ভারতীয়, ৯ ইতালীয় এবং ৭ জাপানি নাগরিক।
ফিলিস্তিনের পক্ষে জাতিসংঘের রায়
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধের পক্ষে জাতিসংঘ রায় দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে বাধাহীনভাবে পাস হয়েছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব।
২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ রোজ শুক্রবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়। ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধের ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নেই। ভোট দান থেকে বিরত থাকা যুক্তরাষ্ট্র বাদে বাকি ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাস হয়।
সিরিয়া সঙ্কট
গত ছয় বছর ধরেই সিরিয়ায় চলছে সঙ্কট। এ হামলায় কয়েক কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বিধ্বস্ত হয়েছে পুরো দেশ। তবে চলতি বছরের শেষ দিকে সিরিয়া সঙ্কটের একটা সমাধানে আসতে দেখা যাচ্ছে। সেটা হতে যাচ্ছে ওবামার নীতির বিপরীতে। বাশার আল আসাদ সরকারকে উৎখাতে নেমেছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য দেশগুলো। তাদের সাথে যোগ দিয়েছিল তুরস্ক, সৌদি আরবও। কিন্তু বছর শেষে জয়ী হয়েছে রাশিয়া।
তাদের সাথে যোগ দিয়েছে তুরস্ক, ইরান। ফলে সেখানে নতুন সমীকরণের সৃষ্টি হয়েছে। সেটা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে প্লাবিত হতে পারে। বদলে যেতে পারে ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ।
ওআইসির নীরবতা ও মুসলিম জাতিসংঘের দাবি
মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশের ৫৭টি ইসলামি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো অপারেশান (ওআইসি)। জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধিত্বমূলক এই সংস্থাটি মূলত মুসলমানদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। কিন্তু চলতি বছর সারাবিশ্বে মুসলমানদের উপর অন্য ধর্মের লোকেরা নির্যাতন-নিপীড়ণ ও হত্যাযজ্ঞ চালানো অব্যাহত রাখার পরেও ওআইসির নীরতায় মুসলিম দেশগুলোর তীব্র নিন্দা অব্যাহত থাকে। এমনকি শীর্ষ আলেম ও নেতৃবৃন্দ ওআইসি ভেঙ্গে মুসলিম জাতিসংঘ গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদে ওআইসির নীরবতায় বিশ্বের মুসলিম দেশগুলো থেকে মুসলিম জাতিসংঘ গঠনের দাবি জোরদার হয়।
ট্রাম্পের বিজয়: মুসলিমবিশ্বের শঙ্কা
আমেরিকার নব্যনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প। তার বিজয় মুসলিম বিশ্বের জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন মুসলিমবিশ্ব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে করেন তার বিজয়ে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ তরান্বিত হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয় লাভের পর বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। মিশ্র প্রতিক্রিয়ার কারণ হচ্ছে, নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেয়া ট্রাম্পের কিছু বিতর্কিত মন্তব্য।
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প ইরাকের বিরুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধ, সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসীদের প্রতি সমর্থন, ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন দেয়া সর্বোপরি বিভিন্ন দেশে আমেরিকার বিপুল সামরিক ব্যয়ের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে চরম বর্ণবাদী বক্তব্য দেয়ার কারণেও বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়ে আছেন। আমেরিকায় অভিবাসী মুসলমানদের জন্যও নিরাপদ নয় ট্রাম্প । এটা গণমাধ্যমে তার বিবৃতির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। একারণে ট্রাম্পের বিজয়ে মুসলিমদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে!
জাকির নায়েক নিয়ে উত্তেজনা!
ডা. জাকির নায়েক মিডিয়ায় ইসলাম প্রচার করে সর্বমহলে পরিচিত একজন ধর্মপ্রচারক। পিস টিভিতে লেকচারের মাধ্যমে তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন সারা বিশ্বে। ধর্মপ্রচার করতে গিয়ে মাসয়ালাগত কিছু ভুলের কারণে তিনি আলেম সমাজে বিতর্কিত। আর বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রচারের দায়ে বিধর্মীদের টার্গেটের শিকার হন। ২০১৬’র অর্ধেকটাজুড়ে ছিল তাকে নিয়ে উত্তেজনা। মূলত গুলশান হামলার পর তাকে নিয়ে উত্তেজনার শুরু।
এসবের সূত্র ধরে জাকির নায়েকের এনজিও ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। সরকার মনে করে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং জোর করে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করা হয় এ সংস্থার মাধ্যমে। জাকির নায়েক ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে শত্রুতা তৈরির পাশাপাশি ভারত ও বিদেশে তরুণদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করছে এমন দাবিও ওঠেছে তার বিরুদ্ধে।
গত জুলাইয়ে গুলশান হত্যাকাণ্ডের পর হামলাকারীদের জাকির নায়েকের বক্তব্য অনুসরণের খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশে তার পিস টিভি বন্ধ করে সরকার। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে জাকির নায়েকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষিদ্ধ। এমনকি মুসলিম প্রধান মালয়েশিয়াতেও তার বক্তব্য প্রচারের অনুমতি নেই।
মক্কার দিকে ইয়েমেনের হুথিদের হামলা
ইরানের সমর্থনপ্রাপ্ত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা মক্কা নগরীর দুটি মসজিদকে কেন্দ্র করে ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়েছে। বিষয়টি সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে উদ্বিগ্ন করে রেখেছে।
সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিল ওই হামলাকে পৃথিবীর পবিত্রতম স্থানে ইরানি অ্যাজেন্টদের ‘নৃশংস হামলা’ বলে মন্তব্য করেছে। সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র পবিত্র নগরী মক্কায় পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করেছে। হুথি বিদ্রোহীদের এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ ও মুসলিম বিশ্বে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।
তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান
তুরস্কের অভ্যুত্থানচেষ্টার খবর তোলপাড় করে দিয়েছিল পুরো বিশ্ব। ১৫ জুলাইয়ের ওই অভ্যুত্থানচেষ্টাটি সারা দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তুর্কি পুলিশ ও জনগণ রাস্তায় নেমে ওই অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এরদোগান এই অভ্যুত্থানচেষ্টার জন্য স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন ও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন। এই অভ্যুত্থানচেষ্টা অনেক সমীকরণ বদলে দেয়। এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত এরদোগান এরপর রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন। রাশিয়ার বিমান ভূপাতিত করা নিয়ে তুরস্ক-রাশিয়ার সম্পর্কে অবনতি হলেও এ ঘটনার পর তা উল্টে যায়; দুই দেশ নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে উদ্যোগ নেয়। অবশ্য বছরের শেষভাগে এসে তুরস্ক আবারো আলোচনায় এসেছে রাজধানী আংকারায় এক প্রদর্শনীতে রুশ রাষ্ট্রদূতকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায়।
সম্পাদনা : রোকন রাইয়ান